শেখ হাসিনা আজ অনুকরণীয় বিশ্বনেতা: নানক

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০২০, ১৬:২৪ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৭

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন বিশাল। সমুদ্রসীমা জয় থেকে মহাকাশে স্যাটেলাইট স্থাপন করেও বিশ্বের এগিয়ে থাকার দেশের কাতারে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বেশ কিছু বড় প্রকল্প বিশ্বকে তাক লাগিয়েছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণসহ এসব প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা আরও উন্নত হবে। দলে ও সরকারে যোগ্য নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছেন। আর তার নেতৃত্ব অনুকরণ করছেন বিশ্বনেতারা।

ঢাকা টাইমসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন। করোনা মহামারিতে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার দিকে সরকারের বিশেষ দৃষ্টিসহ দলের সভাপতিমণ্ডলীর শূন্যপদ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার বিষয়েও কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।

গত এক যুগে আওয়ামী লীগের অর্জনগুলোকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দীর্ঘ ১২ বছর একটানা বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহান নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। দেশ পরিচালনায় তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে মানুষের কাছে ওয়াদা করেছিলেন- কৃষি খাতের উন্নয়ন ও আধুনিকরণ, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নসহ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সার্বিক অবকাঠামো নির্মাণ, সর্বোপরি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবেন।

আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সে অসাধ্য সাধন হয়েছে। আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর কাছে একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বিশ্ব মোড়লদের অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মরণঘাতী করোনাভাইরাস যখন সারাবিশ্বকে থাবা দিয়েছে, সারা পৃথিবীতে যখন প্রবৃদ্ধি কমে গিয়েছে, প্রবৃদ্ধি যখন সর্বোনিম্ন পর্যায়ে তখনো কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চৌকস নেত্রীত্বে আজকে বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধি সঠিক অবস্থানে রেখেছে, সঠিক মাপে রেখেছে। বিশ্বমন্দার সময়, এ প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে লকডাউন করে দিয়েছিল। আমাদের দেশও কিছুদিন লকডাউন করার পরে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের দেশে বৈদেশিক  মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হলো পোশাক খাত। এ পোশাক খাত যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু আজ বিশ্ব শেখ হাসিনাকে অনুকরণ করছে। শুধু জীবন নিয়ে থাকলে চলবে না- জীবনকে বাঁচাতে হলে জীবিকা প্রয়োজন। জীবন ও জীবিকা দুটোই একসঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে। কাজেই জীবনকে রক্ষা করতেই জীবিকা প্রয়োজন। সে কারণে বাংলাদেশে কোনো খাদ্যাভাব দেখা দেয়নি, খাদ্য সংকট দেখা দেয়নি, মানুষ অনাহারে থাকেনি, মানুষ অর্ধাহারে কাটায়নি।

আজকে বাংলাদেশে মেট্রোরেল আর স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তবতা। বাংলাদেশে পদ্মা সেতু নির্মাণ এক বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। বাংলাদেশ দেখালো তারা নিজেরাই সক্ষমতা রাখে পদ্মা সেতুর মতো সেতু তৈরি করার। পদ্মা সেতু আজকে স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। কর্ণফুলী  টানেলের কথা বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন ভাবতেও পারেনি। চট্টগ্রামের মানুষ ভাবতেই পারেনি। কর্ণফুলী টানেল এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। বাংলাদেশ সমুদ্র বিজয় করেছে। শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছে একটি সমুদ্র-সীমানা আছে, যেই সমুদ্র সীমানার মীমাংসা হলে বাংলাদেশ আরেকটি বাংলাদেশকে খুঁজে পাবে। শেখ হাসিনা সে বাংলাদেশকে খুঁজে দিয়েছে। বাংলাদেশ আজ তার নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা আকাশ জয় করেছি।

বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার অসম্ভব ছিল। ইনডেমনিটি আইন করে এটি জিয়াউর রহমান, এরশাদরা চিরদিনের জন্য সিল্ড করে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সেই নেতা যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন সাধারণ আদালতে, স্বাভাবিক আদলতে ও সে রায় কার্যকর করেছেন। বাংলাদেশে একাত্তরের ঘাতকদের, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। শুধু বিচার হয়নি, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। এই বিচার বন্ধ করার জন্য বিশ্বের বহু মোড়লেরা চেষ্টা করেছেন, কিন্তু শেখ হাসিনা সেই সাহসী নেতা, যিনি কারো কাছে আত্মসমর্পন করেননি। কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পাননি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এক নিরাপদ, আধুনিক বাংলাদেশ।

দলের সভাপতিমন্ডলীর দুই সদস্যপদ আর কিছু সাংগঠনিক পদ খালি আছে বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না?

খুব দুঃখজনক আমাদের দুইজন নেতা মোহাম্মদ নাসিম এবং এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন একজন করোনাভাইরাসে, একজন বাধ্যক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের পদ কখনো খালি থাকে না। বর্তমানে আরও দুই চারটি পদ খালি আছে। এটি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আমরা নেত্রীকে নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে আমরা রাখছি। তার জীবনের নিরাপত্তার কারণে। নেত্রীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। আমরা আশা করছি, অচিরেই এই শূন্যপদ গুলো পূরণ করা হবে।

অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে বেশ কিছু কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি...

আওয়ামী লীগ মহানগর উত্তর, দক্ষিণ এবং বিভিন্ন জেলায় যে সম্মলন আমরা করেছিলেন শুধু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা হয়েছে। পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি। সহযোগী সংগঠনও আছে, যাদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। জেলার কমিটিগুলোর বিষয়ে আমরা প্রচন্ড কাজ করছি, জেলাগুলো প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো এখন মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া হয়েছে। তিনি এ কমিটিগুলো দেখে অনুমোদন দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফেরত পাঠাবেন। অনুমোদন দিয়ে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা কমিটি দিয়ে দেব। ঢাকা মহানগর কমিটি অচিরেই পাবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগেরও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা হয়েছে। বাকী পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি। আশা করি, এ মাসের মধ্যে কমিটিগুলো পেয়ে যাবেন।

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/ডিএম)