ভালো দামে করলাচাষিদের মুখে হাসি

আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
| আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২০, ১৪:০১ | প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৩৭

‘আমার ক্ষেতে এবার মেলা ওইস্তা (করলা) ধরছে। এবার ওইস্তা বেইচা ভাল লাভ হইচে।’ একমূখ হাসি নিয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করলেন করলাচাষি বাদল মোল্লা। করলার ফলন ভাল ও দাম বেশি পাওয়ায় এমন হাসি সদর উপজেলার পূর্ব মকিমপুর, চান্দিরচর, হুরার চর গ্রামের করলাচাষিদের মুখে।

এবার বন্যার পানি নামার পরপরই কৃষকরা অন্যান্য সবজির সঙ্গে করলার চাষ শুরু করেন। উৎপাদন ও ভালো দাম পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার‌্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলার মধ্যে সদর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলায় করলা চাষ হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলার পূর্ব মকিমপুর, চান্দিরচর, হুরার চর, সাটুরিয়া উপজেলার জান্না, হরগজ এবং সিংগাইর উপজেলার সাহরাইল, জয়মন্টপ ও তালেবপুরে করলার চাষ বেশি হয়ে থাকে।

সদর উপজেলার পূর্ব মকিমপুর গ্রামের চাষি বাদল মোল্লা বলেন, ‘বন্যার পানি নামার পরপরই আমি সাত বিঘা জমিতে করলা চাষ করি। জমি প্রস্তুত, সার, কিটনাশক, শ্রমিকের মজুরি বাবদ আমার দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এবার বাজার দর ভালো থাকায় এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মত করলা বিক্রি করেছি। বাজারে দাম এমনি থাকলে আরো আড়াই লাখ টাকার মত করলা বিক্রি করতে পারব।’

চান্দিরচর গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবার করলার বাজার দর অনেক বেশি। গত ৮/১০ বছরেও এমন দাম পাওয়া যায়নি। প্রতিবছর চালান ওঠে সামান্য লাভ হতো। আগের বছর প্রতিমণ ১২ শত থেকে ১৪ শত টাকায় বিক্রি করেছি কিন্তু এবার বাজার দর ভালো হওয়ায় প্রতি মণ দুই হাজার থেকে ২২ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে করে আমরা লাভবান হচ্ছি।’

হুরার চর গ্রামের জুলেখা আক্তার বলেন, ‘এবার তিন বিঘা ১০ শতাংশ জমিতে করলা চাষ করেছি। সব মিলে আমার খরচ হয় ৯৪ হাজার টাকার মত। এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকার মত বিক্রি করেছি। আরো লাখ খানেক টাকার মত বিক্রি হবে।’

একাধিক পাইকারের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা চাষিদের থেকে করলা কিনে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সাভার, কোনাবাড়ী, বাইপেলসহ ঢাকার বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করি। কিন্তু এবার মণ প্রতি ৮/৯ শত টাকা বেশি দামে করলা কিনতে হচ্ছে। এতে করে বাজার ভালো থাকলে কোন দিন ৩/৪ হাজার টাকা লাভ হয়। আবার কোন দিন ১/২ হাজার টাকা লোকসানও হয়।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহজাহান আলী বিশ্বাস জানান, এ বছর শীতকালীন শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা আট হাজার ৫০০ হেক্টর। এরই মধ্যে প্রায় তিন হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা করলাসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি ব্যাপক আকারে চাষ করেছে।

তিনি আরো জানান, এবার বন্যার পর কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বীজসহ ও অন্যান্য সহায়তা পেয়েছেন। ফলে অন্যান্য সবজির মত করলার ফলনও ভালো হয়েছে। করলার দাম বেশি পাওয়ায় তারা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েও অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :