ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দীর্ঘ সময়েও নৌ-বন্দরের কাজের অগ্রগতি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুর
 | প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০২০, ১৭:২৯

ঘোষণার সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটে নৌ-বন্দরের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। ভূমি জরিপ ও অধিগ্রহণের জন্য সার্ভেয়ার নিয়োগ করা হলেও তারা এখনও কাজ শুরু করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ মজুচৌধুরীরহাটে নৌ-বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নৌ-বন্দর বাস্তবায়িত হলে ২১ জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগের নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হবে। কিন্তু এখনও এর কাজ একটুও এগোয়নি।

তবে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেছেন, প্রকল্পটি নৌ-মন্ত্রনালয়ে প্রক্রিয়াধীন। প্রকল্পটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে নৌ-বন্দরের কাজ শুরু হবে।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মজুচৌধুরীরহাটের অবস্থান। এ মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাট থেকে বরিশাল, চট্রগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলার মানুষ এ নৌ-রুট দিয়ে চলাচল করে আসছে। এখানে নৌ-বন্দর নির্মাণ করার জন্য দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এ অঞ্চলের মানুষের। এ দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লক্ষ্মীপুরে এসে নৌ-বন্দর নির্মাণ প্রকল্পসহ বেশ কিছু কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে একই বছরের ১২ জানুয়ারি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের টিএ শাখা রাষ্ট্রপ্রতির আদেশক্রমে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু ঘোষণার সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বন্দর নির্মাণের কোন অগ্রগতি নেই।

অভিযোগ রয়েছে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটি এর যৌথ সার্ভে কমিটির সমন্বয়হীনতার কারণে প্রকল্পটির বাস্তবায়ণ সংকট তৈরি হয়। এতে করে বন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। দ্রুত বন্দর বাস্তবায়ন চায় জেলাবাসী। নৌ-বন্দর বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধনসহ নানা কর্মসূচিও পালন করে আসছে সর্বস্তরের মানুষ। এদিকে, একাধিকবার লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার সঙ্গে লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা দিয়েও এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি জেলাবাসী।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্যাথলজি মালিক সমিতির সভাপতি ও বিডিবাংলানিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকমের প্রকাশক সম্পাদক আব্বাছ হোসেন ও প্যাথলজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, ব্যবসায়ী ও শীর্ষ ডটকমের সম্পাদক নজরুল ইসলাম জয়সহ অনেক ব্যবসায়ী জানান, মজুচৌধূরীরহাটে নৌ-বন্দরটি বাস্তবায়িত হলে বরিশাল, চট্রগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগের নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হবে। তৈরি হবে শিল্প কলকারখানা। দ্রুত প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি স্থানীয়দের।

জেলা বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউছার ও জেলা বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, বন্দরের কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দ্রুত বন্দর বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।

লক্ষ্মীপুর জেলা উন্নয়ন বাস্তবায়ণ পরিষদের সদস্য সচিব হোসাইন আহমেদ হেলাল জানান, নৌ-বন্দর নির্মাণের জন্য সরকারকে জমি দিতে প্রস্তুত। সরকার নদী বন্দরের যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটি দ্রুত বাস্তাবয়ণ হলে এ বন্দর হবে ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র। প্রসার ঘটবে লাখ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে।

অন্যদিকে চাঁদপুর বিআইডাব্লিউটিএ উপ-পরিচালক একেএম কাইছারুল ইসলাম বলেছেন, মজুচৌধুরীরঘাটের ইজারা নিয়ে আইনী জটিলতা, দ্বৈত প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে আটকে আছে নৌ-বন্দরের সার্ভের কাজ। এ দাপ্তরিক জটিলতা নিষ্পত্তি না হলে বন্দরের সার্ভের কাজ কোনভাবে শুরু করা যাচ্ছেনা। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণ, সীমানা নির্ধারণসহ বন্দরের উন্নয়নমূলক কাজ পুরোপুরি বিআইডাব্লিউটি এর কাছে হস্তান্তর না হওয়ায় কাজের ধীরগতি বলে জানান তিনি। তারপরও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জমি অধিগ্রহণ ও সার্ভের কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :