ধান তোলায় ব্যস্ত কৃষক, দাম নিয়ে শঙ্কা

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ)
| আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২০, ১৪:০১ | প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৩৯

এবার দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় বীজতলা নষ্ট হলেও মাঠ ভরা সোনালি ধানে হাসি ফুটেছে নওগাঁর ধামইরহাটের কৃষকদের মুখে। নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষক-কৃষানির যেন দম ফেলার সময়টুকুও নেই। মাঠ ভরা ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। প্রতি বছর এ উপজেলার মাঠ ভরা ফসল দেশের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের কাছে কৃষকরা বরাবরই জিম্মি থেকে যাচ্ছে। তাই ধানের ভালো দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

উপজেলায় পুরোপুরি ধান কেনা-বেচা শুরু না হলেও ফরিয়া ধান ব্যবসায়ীরা কৃষকের মাঠে মাঠে এসে ধান ক্রয় করতে দেখা গেছে। তবে ধান কাটার এই মৌসুমে প্রথম ধাপে কৃষকেরা ধানের চড়া মূল্য পেলেও ধীরে ধীরে দরপতন হতে হতে ধানের মূল্য এসে দাঁড়ায় প্রায়ই অর্ধেকে। এতে দেখা গেছে, প্রতিবছর প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা ধান চাষে সার বীজ ও শ্রমিকের মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যায়।

অন্যদিকে, সরকারের বেঁধে দেওয়া ধানের সঠিক মূল্য না পেয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে অর্থ তুলতে গিয়ে কৃষকেরা হয়ে পড়ছেন সর্বশান্ত।

ধান ব্যবসায়ী শামসুজ্জোহা হাকিম বলেন, ‘এখনো আমরা ধান কেনা-বেচা শুরু করিনি। তবে স্বর্ণা- পাঁচ হাজার ৯৫০, বিনাধান- সাত হাজার ৫০ থেকে দশ হাজার ১৪০, উচ্চ ফলনশীল ধানী গোল্ড নয়শ ৫০ থেকে ১ হাজার টাকা, কাটারি ভোগ দশ হাজার ১০০ থেকে দশ হাজার ১৫০ টাকায় বেচাকেনা চলছে।’

তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই। ধানের আমদানির উপরে দাম ওঠানামা করে। আর এগুলোর বিষয়ে যারা কথাবার্তা বলেন তাদের এ লাইনে আগে পড়াশোনা করে আসা প্রয়োজন।’

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর। ১৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর ছিল বিভিন্ন জাতের ব্রি ধান। আর বিনা ধান, স্বর্ণা, কাটারিভোগ, বি আর, জিরাশাইল স্থানীয় জাত চিনি আতপ, হাইব্রিড জাত, ধানী গোল্ড ও এ্যরাইজসহ সর্বমোট ২০ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও বন্যায় উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নে ৭৪ হেক্টর, জাহানপুর ৩৫, আলমপুর দুই ও ধামইরহাটে ১২ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হওয়ায় মোট ২০ হাজার ২২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান অর্জিত হয়েছে। রোপা আমন মৌসুমে সরকার সরকার প্রতিটন ধান ২৬ হাজার টাকায় ক্রয় করবেন বলে জানা গেছে।

কৃষক আব্দুল হাই দুলাল বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশে, বর্ষালী ধান হাইব্রিড লাগানোর পর সেটি তুলে আবার লাগালাম চিনি আতপ। পরে ওনাদের প্রদর্শনী থেকে হাইব্রিড ৪৯ ধান লাগাতে বললে তিনি আমাকে ৩৩ শতাংশ জমিতে সার বীজ ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এর আগে আমি আমার জমি থেকে প্রতিবছর দুইটি ফসল পেতাম। একই জমি থেকে বছরে তিন থেকে চারটি ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। বিষয়টি আমার আগে জানা ছিল না। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শদানে হাইব্রিড ধানী গোল্ড লাগার পরে সরষে লাগিয়েছিলাম। তারপর ওই জমিতে খরালি ইরি লাগালাম। এই ধান কাটার পরে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে বর্ষালি ধান লাগিয়ে আমি সফল হয়েছি।’

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘সরকারের বেধে দেওয়া দরে রোপা আমন ধান কৃষকরা যেনো বেচা-কেনা করতে পারেন, বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৫নভেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :