ধানের শীষ মরা রোগে দিশেহারা কৃষক!

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ধানের শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগ প্রতিরোধে ওষুধ ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে ফলন বির্পযয় নিয়ে দিশে হারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলাজুড়ে ১৮ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার প্রতিটি জমিতে আমন ধান খুব ভালো হয়েছে।

ইতোমধ্যে আগাম জাতের প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। এই ১৮ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে রোপা ধানের মধ্যে ১০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে চিনি আতব ধান রোপণ করা হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, আর মাত্র কয়েকদিন পরেই হয়তো ধান কাটা শুরু হবে। এরই মধ্যে হঠাৎ করেই উপজেলার হরিপুর, আবাদপুকুর, করজগ্রাম, মাধাইমুড়ি, ভান্ডারা, আমগ্রাম, ভেবড়া, দামুয়া, জলকৈসহ বিভিন্ন মাঠে ধানে ব্যাপক হারে শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে।

কৃষকদের দাবি, ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল হচ্ছে না। ফলে ধানে ফলন বির্পযয় দেখা দিতে পারে। এতে করে ধান রক্ষায় এবং লোকসানের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা।

করজগ্রামের কৃষক ওহিদুর রহমান, মাধাইমুড়ি গ্রামের কৃষক রুঞ্জু ও হরিপুর গ্রামের কৃষক গৌর চন্দ্র বলেন, শুরু থেকে মাঠের ধান ভালো থাকলেও ধানের শীষ বের হবার পর থেকে শীষ মরে যাচ্ছে। প্রথমে জমিতে দুই-একটি মরা শীষ দেখা গেলেও বর্তমানে তা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল জানান, তার বিআর ৫১ জাতের প্রায় ছয় বিঘা জমির ধান সম্পন্ন নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলছেন, বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে ধানের ফলন বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

তারা বলছেন, আগাম জাতের মোটা ধান ভালো থাকলেও প্রতি বছর ধান পাকার আগেই মাজরা, কিংবা ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শীষ মরে যায়। এতে ফলন বিপর্যয়ের কারণে লোকসান হয়। এবারও একই রকম অবস্থা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা জুড়ে চলতি মৌসুমে কৃষকদের বিভিন্নভাবে ধান চাষে পরামর্শ দিয়েছি। বিভিন্ন সেমিনার, মিটিং করে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। ফলে কোথাও ব্লাস্ট এবং কারেন্ট পোকার নজির নেই। তবে দুই-একটি জমিতে মাজরা পোকার কারণে কিছু ধানের শীষ মরে যাচ্ছে। এগুলো পরিমানে খুবই অল্প। এতে ধানের ফলন বিপর্যয়ের কোনো আশঙ্কা নেই।

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/কেএম)