আত্মবিশ্বাস হবে পুনরুদ্ধারের মূলমন্ত্র: অধ্যাপক সেলিম উদ্দিন

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০২০, ১৯:১৬

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সেলিম উদ্দিন সম্প্রতি ‘ইমপ্যাক্ট অফ কোভিড-১৯ অন বিজনেস: দি বাংলাদেশ পারসপেক্টটিভ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। এসময় আত্মবিশ্বাস হবে পুনরুদ্ধারের মূলমন্ত্র উল্লেখ করে ড. সেলিম তার প্রবন্ধে বলেন, ‘বিরাজমান কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী এক অস্বাভাবিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী নিউ নরমালের জন্য ভাবতে হবে। প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তে কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। পুরাতন উপায়গুলো পুনরায় ফিরে আসবে, এমন ধারণা পরিহার করে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পুনরুদ্ধার, পরবর্তী নিউ নরমাল দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, বিভিন্ন সংস্থার ডিজিটাল দক্ষতা ত্বরান্বিতকরণ, গ্রাহকের প্রত্যাশা পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। বিক্রয় পুনরুদ্ধার, কার্যক্রম পুনর্ণিমাণ, কাজের পুনর্বিবেচনা ও ডিজিটাল সমাধান গ্রহণকে ত্বরান্বিত করে ২০২১ সালের শুরুর দিকে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মাহামারি দ্বিতীয় প্রভাবের কথা স্মরণ রাখতে হবে।’

তিনি এই সংকটকাল কত দীর্ঘায়িত হবে, অর্থনীতি ও ব্যবসায়ের উপর এর সম্ভাব্য প্রভাব এবং পরিমাণ কেমন হবে তা নিয়ে আলোকপাত করেন।

এছাড়া, ব্যবসায়ের উপর কোভিড এর প্রভাব, বিক্রয় ও ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জসমূহ, টেক্সটাইল, পর্যটন, ফার্মাসিউটিক্যালস, আমদানি-রপ্তানী, এসএমই, স্ট্যার্টআপ ব্যবসা, শিল্পের উৎপাদন, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের উৎপাদন, রাজস্ব খাত, রেমিট্যান্স এবং ঋণ প্রবৃদ্ধির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জসমূহ আলোচনা করেন তিনি।

অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সম্মিলিতভাবে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ড. সেলিম।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলো হলো- পর্যটন, টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, ফুটওয়্যার, লেদার এবং নির্মাণশিল্প। কোভিড-১৯ এর প্রভাবে হাস-মুরগি, দুধ, মৎস চাষের চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট খাতের মূল্যমান হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে গার্মেন্টস শ্রমিক ও মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকরা চাকরি হারিয়েছেন। ফলে, কোন আয়ের উৎস ছাড়াই বিপুল সংখ্যক লোক শহর থেকে গ্রামে চলে গিয়েছিল, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে একটি দুর্বল অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়।’

ডিজিটাল অর্থনীতি, মুদ্রা রহিতকরণ, বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইনগুলো পুনরায় বিন্যাসকরণ, নীতি সংস্কার, মূলধন তারল্যের অগ্রধাবন ও চাকরির ধরণ প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বিগত ছয় মাসে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠন করেছে, দূরবর্তী কার্যক্রম স্থাপন করেছে এবং কঠোর আর্থিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত একটি কার্যকর ও সহজলভ্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া না করে কাজ করার মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংগঠনগুলোকে পুনরায় সংহত করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশিষ্ট ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আইসিএবি’র সাবেক সভাপতি ও গ্রান্ট থর্নটন কনসাল্টিং বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান নুরুল ইসলাম, এফসিএ’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- আইসিএবির বর্তমান সভাপতি ফারুক এফসিএ। অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর সেশন পরিচালনা করেন আইসিএবির সেক্রেটারি ও সিইও (ইনচার্জ) মাহাবুব আহমেদ সিদ্দিক এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সাব্বির আহমেদ। আইসিএবির অন্যান্য সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/পিএল)