সহজ পদ্ধতিতেই দুই মাসে ২০ কেজি ওজন কমিয়েছেন পিন্টু

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০২০, ১১:৩২

ঢাকা টাইমস ডেস্ক

অনেকেই এখন ওজন বেশি হওয়ার সমস্যাই ভুগছেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে সঠিক পদ্ধতি গ্রহণ না করার ফলে ওজন কমাতে পারেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা ওজন কমাতে চাইলেও সে বিষয়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেন। কারণ ওজন কমানোর যাত্রা বেশ কঠিন কাজ।

তবে এমন অনেক লোক রয়েছেন যারা এই সমস্যার সমাধানে শুধু ইচ্ছা পোষণ করেই বসে থাকেন না। তারা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের উদ্দেশ্য সফল করেন। তেমনই একজন ২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী পিন্টু দাস। তিনি ঢাকা টাইমসে লিখেছেন তার ওজন কমানোর গল্প। যারা ওজন কমাতে চান তারা পিন্টু দাসের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন।

নাম: পিন্টু দাস

পেশা: ছাত্র

বয়স: ২৪

উচ্চতা: ৫'৪"

সর্বাধিক ওজন: ৯০ কেজি

বর্তমান ওজন: ৭০ কেজি

ওজন কমেছে: ২০ কেজি

সময় লেগেছে: ৬০ দিন

টার্নিং পয়েন্ট: আসলে আমি ছোটবেলা থেকেই মোটা ছিলাম। সেজন্য আমার বন্ধুরা সবসময় মোটা বলে ডাকত। বন্ধুরা মিলে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে গেলে ওরা আমাকে নিয়ে মজা করত আর বলত যে, তোরই পুরো গাড়ি লাগবে। আরো অনেক কিছু বলত। তখন আমার মনে খারাপ লাগা কাজ করত। মনে মনে বলতাম যদি ওদের মত আমার শরীরের গঠন হত তাহলে ওরাও আমার সাথে মজা করত না। আমিও জীবনটা ভালোভাবে কাটাতাম। খাবার খেতে গেলে শরীরের জন্য নিচে বসতে পারতাম না। এসব বিষয় আমার জীবনযাত্রায় মানসিক এবং শারীরিক ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

 

আমার একটা স্বপ্ন ছিল যে শরীরের ওজন কমিয়ে ভালোভাবে জীবন-যাপন করতে চাই, কীভাবে ওজন কমাবো বুঝতে পারছিলাম  না, খুব ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন ফেসবুকে ডা. জাহাঙ্গীর কবির স্যারের ভিডিও দেখে

খুব অবাক হই, এত দ্রুত এত সুন্দরভাবে ওজন কমানো যায়! আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। কিন্তু খুব খুশি হয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল এবার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারব। তারপর স্যারের ভিডিও ফলো করে আমি আমার ডায়েট শুরু করি। প্রথম প্রথম কিছুটা ভয় হত, যে ওজন কমবে তো, আবার আশাও ছাড়িনি।

ডায়েট শুরু করার আগের দিন ওজন মাপলাম ৯০ কেজি। পরদিন ডায়েট শুরু করলাম। ৭দিন পরে ওজন মেপে দেখলাম ৬ কেজি কমে গেছে। তারপর এক মাস পর ওজন মেপে দেখলাম প্রায় ১২ কেজি কমেছে। ওজন দেখে আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিল না। সেদিনের পর আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। ডায়েট চলতে থাকে। পরের মাসে আরও ৮ কেজি কমেছে।

পরের ৩০ দিন একটু অনিয়মের কারণে ওজন তেমন কমেনি। আমার ওজন এসে দাড়ায় ৭০ কেজিতে। ওজনের মধ্যে থেকেই মেইনটেইন করতে চাই। আমার লক্ষ্য ৬৫ কেজি।

খাবার-

সকালের নাস্তা: অ্যাপল সিডার ভিনেগারের এর সাথে লেবুর রস এবং ঘি দিয়ে ডিম ভাজি।

দুপুরের খাবার: অ্যাপল সিডার ভিনেগার, সবুজ শাক-সবজি (অলিভ অয়েল দিয়ে) অথবা ঘি দিয়ে হালকা ফ্রাই করে মাংস/মাছ। বিকেলে- এক মুঠো বাদাম খেতাম (ঘি দিয়ে ভেজে) আর গ্রিন টি।

রাতের খাবার: অ্যাপল সিডার ভিনেগার এর সাথে  লেবুর রস, ঘি দিয়ে ডিম ভাজি, আর সবুজ সবজি (রাতের খাবার সন্ধ্যা ৭/৮ মধ্যে শেষ করা)।

ব্যায়ামের পরের খাবার: হিমালয়ান লবণ মিশিয়ে এক গ্লাস পানি। শরীর দুর্বল হলে কচি ডাবের পানি খেতাম।

ব্যায়াম: ইয়োগা/ দড়ি লাফানো/অল্প সময় হিট এক্সারসাইজ করা।

ফিটনেস সিক্রেট: ফিটনেস সিক্রেট বলতে আমার কাছে মনে হয়, সবগুলো কাজ ঠিকঠাক করার পর (যা আমাকে বেশি উপকৃত করেছে) সকাল ৫-৬ টার মধ্যকার সময়টাতে হাঁটা। অবশ্যই সেটা শরীরে সকালের রোদ গায়ে মেখে। এই সময়ের রোদ মেদ ঝরানোর জন্য খুব উপকারী। বিশেষ করে পেটের মেদের জন্য। আর রাত ১০/১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে যাওয়া। মাঝে মাঝে  সাঁতার কাটা।

পরামর্শ: যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য বলছি সবার আগে মনকে ঠিক করেন। মনের মধ্যে ইচ্ছে থাকলেই আপনিও পারবেন।

ওজন কমানোর এমন গল্প যদি আপনার থাকে, তাহলে আপনিও লিখতে পারেন ঢাকা টাইমসে। ছবিসহ আপনার লেখা পাঠিয়ে দিন [email protected] এই ঠিকানায়।

ঢাকা টাইমস/২২নভেম্বর/একে