স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বছরজুড়ে পালন করবে বিএনপি

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০২০, ১৯:০৬ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০, ২১:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরিয়ে নেয়ার’ প্রত্যাশা নিয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০২১ সালে বছরব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে বিএনপি।

রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই কথা জানান।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

এরআগে শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির প্রথম ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পারছি যে, গণতন্ত্রের আজকে কি অবস্থা? বিচার ব্যবস্থা, গণমাধ্যমের কী অবস্থা- এটা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। আজকে মুক্তিযুদ্ধের সকল চেতনা ভূলণ্ঠিত। ৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের মূল থিম থাকবে যে, আমরা বাংলাদেশকে সেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরিয়ে নিতে চাই এবং সেই চেতনাকে আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এটা হবে বিএনপির সুর্বণজয়ন্তীর মূল লক্ষ্য এবং মূল উদ্দেশ্য।’

তিনি জানান, ২০২১ সালের সারাবছর ব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও অনাড়াম্বরপূর্ণভাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে থাকবে, বিষয়ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা যেমন-গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়, বৈদেশিক নীতি, সমাজতন্ত্র থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিএনপির ভুমিকা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের কর্মসূচি ভিত্তিক কর্মশালা, বিএনপির শাসনামলের সাফল্য, পুস্তিকা প্রকাশ, লিফলেট বিতরণ, ডকুমেন্টারি নির্মাণ, নৃত্যনাট্য, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী, বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, বাংলাদেশের স্বাধীনতকার ঘোষণা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে বিএনপির ভুমিকা, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শন, দেশ গঠনে জিয়ার ১৯ দফার ভুমিকা, সেনাবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রুপান্তর, শহীদ জিয়ার উন্নয়নের রাজনীতি প্রভৃতি বিষয় আলোচনা সভা এবং ৬টি বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা।

এছাড়া মহানগর-জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও র‌্যালীও রয়েছে কর্মসূচিতে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠন, বিলাতে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে চেষ্টা করেছি, ততকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলাম। আমার পাশে মাঠের মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম সাহেব। এমনিভাবে আমি দাবি করছি- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি) মুক্তিযোদ্ধাদের দল। মুক্তিযুদ্ধে যে চেতনা ছিলো সেই চেতনা আমার চেতনা, সালামের চেতনা, মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা। এদেশের সাম্য, এদেশের গণতন্ত্র, এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, এদেশের মানুষের অধিকার।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজকে ৫০ বছর পরে গণতন্ত্রের আজকে কী অবস্থা? শুধু ব্যক্তি স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার একমাত্র স্বার্থে গণতন্ত্রের টুটি চেপে হত্যা করা হয়েছে। এটা এবার না প্রথম। যারা আছে ক্ষমতায় তারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে আগেই কিন্তু গণতন্ত্র হত্যা করেছিলো।’

বিরোধী দলের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিরোধী দলের অবস্থা তো বুঝেন। আজকে ঘটনা ঘটলে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন, ৭ দিনের মধ্যে চার্জশিট, ১৫ দিনের মধ্যে বিচার শুরু।’

সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধে যে অর্জন বা চাওয়া সেগুলো আমরা অর্জন করেছিলোম, বার বার বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এখন বাধাগ্রস্থ হয়ে আজকে সকল কিছু সকল চেতনা ভুলন্ঠিত। বিচার ব্যবস্থা কী? স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা থাকবে। আজকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিম্ন পর্যন্ত বিচার ব্যবস্থা একটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে-এটা সকলে জানে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/বিইউ/ইএস)