‘আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে মিউচুয়াল করেই কাজ করি’

সুজন সেন, শেরপুর
| আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১১:৪৩ | প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১১:৩৭

‘আসলে এই কাজগুলো আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে মিউচুয়াল করেই করে থাকি। ভাইজান আমি একটু দলিলের কাজে ব্যস্ত আছি। আপনার সঙ্গে এ বিষয়ে পরে যোগাযোগ করবো।’- ফোনে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর শাহজাহান কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান সরকার। একটি কালভার্ট নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথাগুলো বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝাপাড়া এলাকার খালের ওপর দুই লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত বক্স কালভার্টটি ১৩ মাস পরেই ভেঙে পড়েছে। নির্মাণকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের কারণেই কালভার্টটি ভেঙে গেছে। অনিয়মের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

একইসঙ্গে ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে পুনরায় বক্স কালভার্টটি নির্মাণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ।

ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি’র) আওতায় ধানশাইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মাঝাপাড়া এলাকার আব্দুল হামিদের বাড়ির সামনে খালের ওপর দুই লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় শাহজাহান কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি সম্পন্ন করে। কাজ শেষে ২০১৯ সালের ৩০ মে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিলের টাকা তুলে নেন। কালভার্টটি নির্মাণ শেষে এর ওপর দিয়ে জনসাধারণ চলাচল শুরু করার ১৩ মাস পরে চলতি বছরের জুন মাসের বন্যায় কালভার্টটি বিধ্বস্ত হয়।

স্থানীয় মোশারফ ও আজিলা বেগমসহ আরও অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বক্স কালভার্টটি নির্মাণে পরিমাণের চেয়ে কম রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া কালভার্টের অন্যান্য কাজেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এই কারণে বছর না যেতেই এটি ভেঙে পড়ে। এখন যাতায়াতে তাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

বক্স কালভার্টটি নির্মাণে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিন্টু মিয়া (বর্তমানে টাঙ্গাইলে কর্মরত) ফোনে বলেন, এলজিএসপির কাজে আমাদের দেখভালের দায়িত্ব থাকে না। আমরা শুধু প্রাক্কলন তৈরি করে দেই। আমি যে প্রাক্কলন তৈরি করে দিয়েছিলাম, ওইভাবে নির্মাণ করা হলে এত দ্রুত সময়ে বক্স কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ার কথা না। আমার মনে হয় প্রাক্কলন অনুযায়ী চেয়ারম্যান-মেম্বার কাজ করেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মধু মিয়া বলেন, বক্স কালভার্টটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যার পানির চাপে তা ভেঙে গেছে।

ধানশাইল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে, এটি জানতাম না। আপনার মাধ্যমেই জানলাম।

নিম্নমানের কাজ করা হয়নি দাবি করে চেয়ারম্যান বলেন, প্রাক্কলন অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। এটি বন্যাকবলিত এলাকা হওয়ায় পানির তোড়ে তা ভেঙে গেছে হয়ত।

(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :