শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে কুড়িগ্রামে বাড়ছে বাল্যবিয়ে

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১১:৪৯ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১২:৩৩

মমিনুল ইসলাম বাবু, কুড়িগ্রাম

করোনাকালে কুড়িগ্রামে বাড়ছে বাল্যবিয়ের সংখ্যা। করোনার দুর্যোগে দরিদ্র পরিবারে অভাব দেখা দেয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা বাধ্য হয়েই বিয়ে দিচ্ছেন সন্তানদের। আর এতে করে জেলায় বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সচেতনতা আর অর্থনৈতিক সংকটকে দায়ী করছেন জনপ্রতিনিধিরা।

জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর ছোট-বড় প্রায় সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চল রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হতে না হতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার দৃশ্য চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকার চিত্র এমনটাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ‘ভালো ঘর’ পাওয়ায় কিশোরীদের বিয়ে দিচ্ছেন বাবা-মা। মেয়েদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে প্রতিকূল পরিবেশ আর দরিদ্রতার সঙ্গে সামাজিক সমালোচনা। প্রভাব রয়েছে বয়স বাড়ার সঙ্গে যৌতুকের অঙ্ক বেশি হবার শঙ্কা। বাবা-মায়ের কাছে এসব চিন্তা-ভাবনাই কম বয়সে বিয়ে দেয়ার কারণ।

এছাড়াও ‘মেয়েরা সংসারের বোঝা’, পূর্ব পুরুষের এমন কুসংস্কার থেকেও বিয়ে দেয়া হয়ে থাকে বলে অভিমত অভিভাবকদের। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গর্ভধারণ করে কিশোরী মা। এতে করে অপুষ্টিতে ভুগে হারিয়ে ফেলে শারীরিক সক্ষমতা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বিল্ডিং বেটার ফর গার্লস প্রকল্পের জরিপে উঠে এসেছে কুড়িগ্রামের বাল্যবিবাহের ভয়াবহতা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ সালের ডিসেম্বর হতে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ মাসে বাল্যবিয়ে হয়েছে দুই হাজার ৬০৩টি। বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়েছে ৯৬১টি। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিয়ে হয়েছে ৩৩৯টি এবং বন্ধ হয়েছে ৭১টি। শুধু আগস্ট মাসে ৪৭টি বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ১১টি।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বাল্যবিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, বাল্যবিয়ে রোধে আরও কঠোর আইনের প্রয়োগসহ সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/কেএম)