‘সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের বের হতে মানা, টিভিমুক্ত হবে চা দোকান’

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২০, ২২:১৮

মাদারীপুর প্র‌তি‌নি‌ধি, ঢাকাটাইমস

‘সন্ধ্যা ৭টার পর অভিভাবক ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী বাইরে বের হতে পারবে না, আর চায়ের দোকানে কোনো টিভি থাকবে না’ এমন নির্দেশনা জারি করেছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিবচর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বর্তমানে দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতি, কিশোর গ্যাং তৈরি, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সন্ধ্যা ৭টার পরে কোনো শিক্ষার্থী বা উঠতি বয়সী ছেলেরা বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না। যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তাহলে অভিভাবকের সঙ্গে বের হতে পারবে। অপরদিকে আমরা দেখি, বিভিন্ন চায়ের দোকানে অধিক রাত পর্যন্ত টিভি চলে। আর সেই সঙ্গে দোকানগুলোতে জমে উঠে আড্ডা। ওই আড্ডায় বয়স্কদের চেয়ে তরুণ ও উঠতি বয়সের যুবকরাই বেশি থাকে। চায়ের দোকানে টিভি দেখে চা পান করতে করতে শিক্ষার্থীরা অধিক রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরেই সময় পার করে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চরম ক্ষতি হচ্ছে। অধিক রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীই মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। দিনদিন মাদকাসক্ত হয়ে জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া বয়স্করা অধিক রাতে বাড়ি ফেরার কারণে নিজের সন্তানের লেখাপড়ার কোনো খোঁজ নিতে পারছেন না। তাই পৌর এলাকায় রাত ১০টা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাত ৯টার মধ্যে সব দোকান বন্ধ করতে হবে।’

এসময় শিবচর পৌর মেয়র আওলাদ হোসেন খান তাকে অবগত করেন শিবচরে দোকানপাট রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। 

ডিসি বলেন, ‘চায়ের দোকানগুলোতে অবশ্যই টিভি চালানো বন্ধ থাকবে। বর্তমানে প্রতিটি ঘরেই টিভি রয়েছে। তাই চায়ের দোকানে বসে টিভি দেখার কোন যৌক্তিকতা নেই। এই যুবসমাজই আমাদের শক্তি। এই যুবশক্তি যদি অযথা সময় নষ্ট করে অকালে জীবন ধ্বংস করে দেয়- তাহলে সেটা দেশের জন্য শুভকর হবে না। তাই আমরা যারা সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি রয়েছি- সবাই উদ্যোগ নিলে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব।’ 

ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘মাদারীপুরের মধ্যে শিবচরের সৌন্দর্য এখন স্বপ্নের মতো। পদ্মা নদী বা পদ্মা সেতুর জন্য এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক সুন্দর। কাজেই এই সৌন্দর্য নিয়ে আমরা যদি পর্যটনের দিকে জোর দিই, তাহলে এটি একটি পর্যটন এলাকা বা একটি উপজেলায় রূপ নেবে।’

সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান আ. লতিফ মোল্লা, পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম রাকিবুল হাসান, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য মোসলেম উদ্দিন খান, শাহজাহান মোল্লা, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান বিএম আতাউর রহমান, ফাহিমা আক্তার, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইলিয়াস পাশা, প্রেসক্লাব সভাপতি একেএম নাসিরুল হক, প্রেসক্লাব ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকারসহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলর, শিক্ষক, ইউপি সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জেলা প্রশাসক উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের উদ্বোধন করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এলএ)