মির্জাপুরে অবৈধ এক দোকান উচ্ছেদ, রাতে দুই ঘর নির্মাণ

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২০, ২১:২৮

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল ও যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে একটি ঘর তোলার খবরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে তা উচ্ছেদের পর রাতের আঁধারে একই স্থানে দুইটি দোকানঘর তুলেছেন প্রভাবশালীরা। এদিকে স্কুলের জমি দখল ও যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দোকানঘর তোলায় চরম বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একই স্থানে আবার দুইটি দোকানঘর তোলায় দখলদারদের প্রভাবে ভীত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা।

উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলের ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মমিননগর সৈয়দপুর এলাকায় এই দখলের ঘটনা ঘটে।

এদিকে বিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জনিয়ে উপজেলা প্রশাসনের নিকট এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সৈয়দপুর মৌজায় ৯০৭ খতিয়ানে ২৪৩৩ নং দাগে ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ৫০ শতাংশ জমি রয়েছে। বিদ্যালয়ের পাশে স্থানীয়দের যাতায়াতসহ কয়েকটি ইটভাটায়ও মালামাল আনা-নেয়া করা হয়। সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের ছেলে প্রভাবশালী আজম খান (৫৫) এবং আনোয়ার মাস্টার (৫৩)সহ কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে বিদ্যালয় সংলগ্ন জমি দখল করে রাস্তা রাতের আঁধারে দোকানঘর নির্মাণ করে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ইটভাটা মালিক ও স্থানীয়রা বিপাকে পড়ে।

এ খবর পত্রিকায় প্রকাশ হলে মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জুবায়ের হোসেনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে রাস্তা থেকে ওই ঘর উচ্ছেদ করা হয়।

এদিকে উচ্ছেদের এক সপ্তাহ পার না হতে গত ১৮ নভেম্বর রাতে একই স্থানে আবার প্রভাবশালী আজম খান ও আনোয়ার মাস্টারের নেতৃত্বে দুইটি দোকানঘর তোলা হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইটভাটা মালিক ও এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন, নুর মোহাম্মদ, রফিক মিয়া, আওলাদ হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী আজম খানের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাদের নানাভাবে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হয়। স্কুলের জমি দখল করে ও যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে ঘর তোলায় দেওয়ায় এলাকাবাসীসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে তারা জানান।

অভিযুক্ত আজম খান ও আনোয়ার হোসেন মাস্টার বলেন, সৈয়দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তাদের জমি রয়েছে। সেই জমির রাস্তার জন্য ইটভাটার কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছিল। এখন ভাড়া না দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে তারা জানান।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জয়দেব সরকার বলেন, বিদ্যালয়ের নামে থাকা ৫০ শতাংশ জমির সীমানা নির্ধারণ করা না থাকার সুযোগে কিছু লোক বিভিন্নভাবে কাগজ তৈরি করে দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণপূর্বক বেদখল হওয়া ভূমি দখলমুক্ত করার জন্য তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন বলেন, স্কুলের জমির সীমানা নির্ধারণ না থাকায় পাশ্ববর্তী জমির মালিকের সঙ্গে সীমানা নিয়ে সমস্যা রয়েছে।

রাস্তা বন্ধের বিষয়ে বলেন, ওই স্থানে নকশায় কোন রাস্তা না থাকায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে  না। তারপরও রাস্তা যাতে বন্ধ না হয়- সে বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবসা নেয়া হবে।

মির্জাপুর থানার ওসি সায়েদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে পরামর্শ করে রাস্তা দখলমুক্ত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এলএ)