ভিক্ষুক থেকে আইনজীবী তৃতীয় লিঙ্গের নিশা

প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০২০, ১৯:২৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সারাদিন করাচির রাস্তায় ভিক্ষা করতেন আর রাতের আঁধার নামলেই বসে পড়তেন ‘আইনের’ বই নিয়ে। এই ছিল ২৮ বছর বয়সী নিশা রাওয়ের জীবন।

জন্মগতভাবে ‘হিজড়া’ বা তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ায় ১৮ বছর বয়সেই লাহোরের নিজ বাড়ি থেকে বিতাড়িত হন তিনি।

আর এখন সেই নিশাই পাকিস্তানের করাচি শহরের বার কাউন্সিলের সদস্য। নারী ও হিজড়াদের অধিকার আদায়ে লড়ছেন করাচির আদালতে। নিশা জানিয়েছেন তার হাতে এখন অর্ধশত মামলা রয়েছে।   

কে জানত ভিক্ষার টাকাই কেনা আইনের বইগুলো হয়তো তাকে একদিন করাচির আদালতের আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলবে?

সবাই হয়তো ধরেই নিয়েছিল অন্য সকল ‘হিজড়ার’ মতো তিনি হয়তো রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করবেন কিংবা কোনো যৌন পল্লীতে কাজ করবেন। কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো।

সারাদিনের ভিক্ষার টাকা দিয়ে করাচির একটি নৈশ আইন কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন নিশা। কয়েক বছরের চেষ্টায় সেখান থেকে আইনের ওপর ডিগ্রি অর্জন করেন। যেটা পাকিস্তানের মতো রক্ষণশীল একটি দেশে মোটেও সহজ ছিল না। তবে এখনই থেমে যেতে চান না নিশা রাও। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, তার লক্ষ্য পাকিস্তানের বিচারপতি হওয়া।  

নায়াব নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজন বলেন, ‘নিশা একসময় আমাদের সঙ্গেই ভিক্ষা করত। আজ সে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো সে আমাদের সাহায্য করে। এমনকি আমরা যদি মাঝরাতেও তার সাহায্য চাই সে সাড়া দেয়।’

২০০৯ সালে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় পরিচয়পত্রে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়ার অনুমতি দেয়।

আর সমাজে ‘হিজড়া’ বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ‍অধিকারের সুরক্ষায় ২০১৮ সালে দেশটির পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়।

ওই আইনে তাদের অন্য সবার মতো সমঅধিকারের স্বীকৃতি এবং সামাজিক বৈষম্য ও নৃসংশতা থেকে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এনএইচএস/জেবি)