গার্মেন্টস শিল্পে ফের প্রণোদনার কথা ভাবছে সরকার

প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০২০, ২০:০৪ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০, ২০:১১

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গার্মেন্টস শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকার এক দফা প্রণোদনা দিয়েছে। বৈশ্বিক এই মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আসতে শুরু করেছে। এজন্য আবারো গার্মেন্ট শিল্পকে প্রণোদনা দেয়ার কথা সরকার ভাবছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী  গোলাম দস্তগীর গাজী।

শুক্রবার দুপুরে  গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে তিনি  সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।  পরে শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের  নির্মাণকাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।

গত মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর অর্থনৈতিক আঘাত থেকে শ্রমিকদের বাঁচাতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ স্বাধীনতা দিবসের আগে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রপ্তানি খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য তিনি এই ঘোষণা দেন৷ প্রণোদনার সেই অর্থ পেয়ে শ্রমিকদের বেতনে ব্যয় করেন পোশাক মালিকরা।

গার্মেন্টস শিল্প বাঁচাতে আবার প্রণোদনার ইঙ্গিত দিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার এই সময়ে গার্মেন্ট সেক্টরে ব্যবসায়ীদের অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এতে গার্মেন্টস মালিকরা ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে। সরকারি প্রণোদনা পেয়ে গার্মেন্টস সেক্টর ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন এই সেক্টরের পুরোদমে কাজ চলছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে আরও অনেক ছোট-বড় শিল্প জড়িত। এই সেক্টর ক্ষতির মধ্যে পড়লে ওই সব শিল্পও ক্ষতির মধ্যে পড়ে। তাই করোনার দ্বিতীয় ধাপেও যদি গার্মেন্টস সেক্টরে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে সরকার পুনরায় তাদের সহযোগিতা করবে। কারণ এই সেক্টরে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের জীবন-জীবিকা এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাই এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকার যা যা করণীয় তাই করবে।’

পাটমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হবে। এই পাটকলগুলো অব্যাহত লোকসান দিচ্ছে। প্রতি বছরই এই পাটকলগুলো সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তাই সরকারি পাটকলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোল্ডেন হ্যান্ডক্যাশ দিয়ে পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারে খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কার আমাকে দেশ গঠনের কাজে আরও অনুপ্রাণিত করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজীবন কাজ করে যাবো। দেশের উন্নয়ন যেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, এটাই সবার কাছে আমার কামনা।’

গোলাম দস্তগীর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। বিখ্যাত ক্র্যাক প্লাটুনের একজন যোদ্ধা হিসেবে দুঃসাহসিকতার সঙ্গে বিভিন্ন সম্মুখ সমরে অংশগহণ করেছি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বীরপ্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত থেকে খেতাব, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার এ দুটিই আমি পেয়েছি। এ রকম ভাগ্য কার আছে? আর আমার পাওয়ার কিছু নাই।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দিলীপ কুমার সাহা (অতিরিক্ত সচিব), বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/জেবি)