জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সামগ্রিক পরিকল্পনার আহ্বান পুতুলের

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্যে সামগ্রিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন সিভিএম থিমেটিক অ্যাম্বাসেডর ফর ভালনারেবিলিটি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটি একটি বড় ধরনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা যদি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জীবনযাত্রার দিকে লক্ষ্য করি, তবে দেখতে পাই যে কীভাবে তারা জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট প্রাকৃতিক সংকটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। কী উপায়ে তারা টিকে আছে আমরা সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে সাহায্য করতে পারি।’

গতকাল সোমবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত ‘সিভিএফ-সিওপি ২৬ ডায়লগ: মিটিং দ্য সার্ভাইভাল, ডেডলাইন টুওয়ার্ডর্স ম্যাক্সিমাল রেসিলিয়েন্স’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তব্যে তিনি এই এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি কমিটি অন নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার্স অ্যান্ড অটিজমের চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ  বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিরূপ পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো এই মানুষগুলোর জীবনযাত্রার দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে অধিকাংশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো তাদের সবটুকু সামর্থ দিয়ে টিকে আছে। আমাদের এই সব মানুষেরা কিভীবে টিকে থাকতে পারে সেদিকে দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।’

পুতুল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলার সময় আমরা তাপমাত্রা হ্রাস ও গ্রিন হাউস গ্যাস ও যেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর ওপর জোর দিই। আমাদের নিজ দেশের মানুষের ঝুঁকিপূর্ণতার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে আমরা ওই সব মানুষের কথা ভুলে যাই।’

সায়মা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামো ধ্বংস হয়। এছাড়াও জীবন, জীবিকা ও মানুষের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং ইকো-সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যায় এবং এই সবকিছুর প্রভাবে পড়ে সেই সব মানুষের ওপর যারা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ। অধিকন্তু তাদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে, তাদের অক্ষমতা ও স্বাস্থ্যগত কারণে তাদের অবস্থা আরও বিপন্ন হয়ে পড়ে।’

প্রধানমন্ত্রীর কন্যা বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে আমরা এসব বৈশ্বিক সংকটের ভয়াবহতা সম্পর্কে যখন অবগত হচ্ছি, তখন এ বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করে সামনে এগুনোর একটি সুযোগ। উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে ‘যতক্ষণ না সবদিক বিবেচনা করে সামগ্রিকভাবে সমস্যাটিকে চিহ্নিত করতে না পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ইস্যুই আলাদা নয়।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নেন।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ)-এর সকল সদস্য আলোচনায় যোগ দিয়ে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় কোপ-২৬ সম্পর্কে তাদের পরামর্শ ও সুপারিশ ব্যক্ত করেন। এদের সবাই লন্ডনে বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত।

যুক্তরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর, পরিবেশ ও কোপ ২৬ বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড জ্যাক গোল্ডস্মিথ অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অর্নার হিসেবে যোগ দেন। গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রফেসর ড. প্যাট্রিক ভার্কুইজেন এবং সিভিএফ এক্সপার্ট অ্যাডভাইসরি গ্রুপ এর চেয়ারম্যান এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর পরিচালক প্রফেসর ড. সলিমুল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম প্রেসিডেন্টির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ সিভিএফ এর ওপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। লন্ডনে বাংলাদেশি হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম ভার্চুয়াল আলোচনা সভাটির সঞ্চালনা করেন।

(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/জেবি)