মুলার মণ ১০ টাকা!

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:১২ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:০৮

রাহেবুল ইসলাম টিটুল, লালমনিরহাট

পাইকারীতে প্রতি মন মুলা ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করছেন লালমনিরহাটের কৃষকরা। জেলাটিতে শীতকালীন এ সবজির কোনো ক্রেতা নেই। তাই, আলু রোপণের স্বার্থে কৃষকরা এখন পাইকারদের বলতে গেলে বিনামূল্যে মুলা দিয়ে দিচ্ছেন।

জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে জেলার স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা প্রকারভেদে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন খুচরা বাজারে ২-৩ টাকা কেজি হলেও পাইকারিতে ১০-১৫ টাকা মণেও নিচ্ছে না। ফলে ক্ষেত থেকে মূলা তুলতে যে শ্রমিক খরচ, তাও উঠছে না কৃষকের।

আক্ষেপ করে চাষিরা বলছেন, আগাম মুলা নষ্ট হয়েছে বৃষ্টি-বন্যাতে। দ্বিতীয় দফায় ফলন ভালো হলেও দাম নেই। এক মণ মুলা বেচে ১০০ গ্রাম চালও কেনা যাচ্ছে না। এখন বাজারে প্রতি কেজি সাধারণ মানের আটাশ চালও কিনতে লাগে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা।

আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, মুলা নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। প্রতি দোন জমির (২৭ শতক) মুলা বিক্রি করে এক হাজার টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মুলার ক্রেতা নেই। পরের ফসল আবাদের সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। আলু ও ভুট্টা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের এখন তারা বিনামূল্যে মুলা দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে এসব তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নবীনগর গিয়ে দেখা গেছে, চাষিরা ট্রাক্টর দিয়ে মুলাক্ষেত নষ্ট করছেন।

তারা বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছি। প্রথমবার ৪৫ ও দ্বিতীয়বার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দাম না পাওয়ায় নিজেই মুলা নষ্ট করছি। ভুট্টা-আলু লাগালে হয়তো ক্ষতি কিছুটা পোষানো যাবে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, পাঁচ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে কতটুকু জমিতে মুলা চাষ হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে জেলার সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর পরিমাণে মুলাসহ অন্যান্য সবজি চাষ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, ‘রবি মৌসুমে বেশিরভাগ চাষি মুলা আবাদ করেছেন। বাজারে চাহিদা না থাকায় তারা দাম পাচ্ছেন না। যেকোনো ফসল ফলানোর আগে চাহিদার বিষয় খেয়াল রাখা দরকার।’

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/পিএল)