‘ধর্ষণ’ আসামিদের পক্ষ নেয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রত্যাহার

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:২৭

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বগুড়ার ধুনটে ধর্ষণ মামলার বাদীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং আসামিদের পক্ষ নেয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই আহসানুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিন মাস আগে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা ধুনট থানায় পাঁচজনের নামে অভিযোগ করেন। সে সময় থানায় মামলা রেকর্ডের পর এসআই আহসানুল হককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু আসামিদের পক্ষ নিয়ে তিনি তিন মাসেও আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেননি।

বুধবার বিকালে এসআই আহসানুল হককে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।

জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী তার নানার বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যাওয়ার সময় মাসুদ রানা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলু তাকে অপহরণ করে। এরপর গত ১২ আগস্ট ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে মাসুদ রানা, ইউপি সদস্য ফজলুসহ পাঁচজনের নামে ধুনট থানায় অপহরণ মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি। ঘটনার এক মাস নয় দিন পর কিশোরীর বাবা সিরাজগঞ্জ শহর থেকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারের পর ওই কিশোরী জানায়, তাকে ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করানোর পর অভিযুক্তরা প্রায় এক মাস তাকে ধর্ষণ করেছে।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা জানান, তার মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসার পর থেকেই স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান, বর্তমান চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মিলে এই মামলা মীমাংসা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। তারা আপস না করায় সামাজিকভাবে একঘরে করে রাখা হয় তাদের পরিবারকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি বারবার জানানোর পরেও তিনি আসামিদের পক্ষ নিয়ে বাদীকে গালিগালাজ করেন। ফলে  অনেকটা বাধ্য হয়েই আপস করতে রাজি হন তারা। সেই অনুযায়ী আসামিরা বাদীকে বগুড়া শহরে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। এছাড়াও মেয়ের বিয়ের সময় দেড় লাখ টাকা দিতে চায়। 

এদিকে মামলার তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করতে গেলে শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানকে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মামলার বাদী। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বগুড়ার পুলিশ সুপারের আদেশে মঙ্গলবার রাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আহসানুল হককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, বাদীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং তিন মাসেও আসামি ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আহসানুল হককে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/এলএ)