করোনা থাবায় সাভারে ৫ পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:৪৯

সাভার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সাভারের আশুলিয়ায় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় পাঁচটি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে তিনটি কারখানা স্থায়ী বন্ধ ও অপর দুটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়। কারখানাগুলোতে প্রায় ২ হাজার ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।

কারখানা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মদিনাপেল ফ্যাশনস ক্রাফট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ নেই। কারখানা বন্ধ রেখে শ্রমিকদের বেতন দেয়া হচ্ছিল। করোনা মহামারির প্রথম ধাক্কা পরবর্তী আমরা কষ্ট করে হলেও শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছিলাম, এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। আগামীতে যদি তৈরি পোশাকের নতুন ক্রয়াদেশ আসে তাহলে কারখানা আবার চালু করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজ না থাকার কারণে এই কারখানা আপাতত লে-অফ করা হলো। ক্রয়াদেশ যদি আরও কমে যায় তাহলে গ্রুপের অন্য কারখানাগুলোও পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে হবে। তবে আশা করছি জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন এসে যাবে। ভ্যাকসিন এসে গেলে ইউরোপ-আমেরিকায় তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়তে হবে। তখন ক্রয়াদেশ ফিরবে। তখন কারখানাও চালু করতে পারবো।

আশুলিয়ার ধনাইদ এলাকার সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড কারখানা স্থায়ী বন্ধ ও জামগড়া এলাকার মদিনাপের ফ্যাশনস ক্রাফট লিমিটেড কারখানা ৪৫ দিনের লে-অফ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া আশুলিয়ার ন্যাচারাল সোয়েটার ও পুর্বা সোয়েটার স্থায়ী বন্ধ ঘোষণার খবর পাওয়া গেছে। ন্যাচারাল সোয়েটারে এক হাজার ১০০ শ্রমিক ও পুর্বা সোয়েটারে ২৫০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।

অন্যদিকে নিউ আইডিএস সোয়েটার কারখানার একটি সেকশন লে-অফ ঘোষণা করা হয়। যেখানে ১০০ শ্রমিক কাজ করতেন। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। শ্রমিকরা ভালো  সময়ে সেবা দিয়েছে। তখন তো তারা বেশি বেতন পায়নি। এখন খারাপ দিন আসায় লে-অফ করে শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানো হচ্ছে।

সিগমা ফ্যাশনের দেয়া নোটিসে বলা হয়, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ শত চেষ্টা করেও পর্যাপ্ত কাজ সংগ্রহ করতে পারেনি। ক্রমাগত ক্রয়াদেশ কমার ফলে কাজ বর্তমানে শূন্যের কোঠায় নেমেছে। এ কারণে কারখানা ক্রমাগত আর্থিক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি দিন দিন ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৩০ নভেম্বর থেকে কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইনানুগ যাবতীয় সুবিধা আগামী ৭ ডিসেম্বর পরিশোধ করা হবে।

অপর কারখানা মদিনাপেল ফ্যাশনস ক্রাফট লিমিটেডের নোটিসে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি ও আকস্মিক বিপত্তির কারণে কারখানার বিভিন্ন সেকশনে কাজ না থাকার ফলে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কারখানা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১২ ধারা মোতাবেক ১ ডিসেম্বর থেকে ৪৫ দিনের লে-অফ ঘোষণা করা হলো।

এই আইন অনুযায়ী কারখানায় কাজ না থাকলে অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্তৃপক্ষ লে-অফ ঘোষাণা করতে পারে। এ সময়কাল মাসিক হারে এক বছর ধরে চাকরি করা শ্রমিকরা তাদের মূল বেতনের অর্ধেক পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/কেএম)