শীতের সবজিতে ভরা বাজার, কমেছে দামও

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:১২ | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সপ্তাহের ব্যবধানে নিম্নমুখী হয়েছে রাজধানীর সবজির বাজার। অধিকাংশ সবজি কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমেছে। তবে আলু, পেঁয়াজের দাম কমার ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব পড়েনি বাজারে। সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর কিছুদিনের মধ্যে নতুন আলু ও পেঁয়াজ আসতে শুরু করলে এই দুটি পণ্যের দামও কমবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।

কারওয়ানবাজারসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অধিকাংশ জায়গায় গত সপ্তাহের চেয়ে বিভিন্ন সবজির দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ৩০ টাকাতেও মিলছে অনেক সবজি। সবজির পাশাপাশি কমেছে পেঁয়াজ, ডিম, মুরগি ও নতুন আলুর দাম। ফলে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।

এসব বাজারের প্রতিটিতেই ফুলকপি, বাধাকপিসহ শীতের প্রচুর সবজি দেখা গেছে। ভোক্তারা চান, আরও কমে সবজি কিনতে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অথচ নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়েও এই সবজির কেজি ১২০ টাকায় কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের।

শিমের পাশাপাশি শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও কমেছে। বড় একটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। আর গত সপ্তাহে ছোট যে ফুলকপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন ১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারে এখন বড় ফুলকপির সরবরাহ বেশি।

মাঝারি আকারের বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুলার দাম কমে ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে মুলার কেজি ৫০ টাকা ছিল।

কিছুদিন আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাউ এখন ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।

শীতের সবজির পাশাপাশি বড় অঙ্কে দাম কমেছে বেগুনের। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের কেজি এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

গত সপ্তাহে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। বাজারে নতুন আসা কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। শালগমের বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। আর লাউয়ের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে আলু-পেঁয়াজ উচ্চমূল্য ধরে রেখেছে। আলু এখনো বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। কারওয়ান বাজারের একজন বিক্রেতা বলে, আলুর দাম মার্কেটে কমতেছে না। আলুর মার্কেটের ওরা (পাইকারি বিক্রেতা) বলে যে, ৪০ থেকে ৪১ টাকা দাম। সেই রেটে আমাদের আনতে হয়। আমরা বেচি ৪৫ টাকা।

ভালো মানের পেঁয়াজ কেজিতে ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এক বিক্রেতা বলেন, ‘নতুন পেঁয়াজ এখনো বাজারে খুব একটা আসেনি। বাজার প্রতিদিন এক টাকা দুই টাকা করে নামতেছে।’ বিক্রেতারা বলছেন, নতুন পেঁয়াজ ও আলু আসতে খুব একটা দেরি নেই। তাই এই দুটি পণ্যের দাম শিগগিরই কমার আশা করছেন বিক্রেতারা। কাঁচামরিচ আগের সপ্তাহের মতো এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

সবজি, নতুন আলু ও পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে ডিম ও মুরগির। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর গত সপ্তাহে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বয়লার মুরগির দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারে ব্যবসায়ী সাজ্জাদ বলেন, কিছুদিন আগে বেশিরভাগ সবজির দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি ছিল। এখন ৩০ টাকার মধ্যে অনেক সবজি পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে প্রতিনিয়ত শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। দিন যত যাবে সবজির দাম আরও কমবে।

মধুবাগ বাজারে থেকে সবজি কেনা রফিকুল বলেন, কিছুদিন আগে বাজারে এসে একটা-দুইটা সবজি কিনে নিয়ে যেতাম। প্রতিটি সবজি অল্প করে কিনতাম। এখন দাম কমায় ব্যাগ ভরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

সবজির পাশাপাশি ডিমের দামও কমেছে। এক ডজন ডিম ৮৫ টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে বাজারে গিয়ে এখন কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা।

ঢাকাটাইমস/৪ডিসেম্বর/এমআর