‘সাজানো’ মামলায় কলেজ শিক্ষকের জীবন দুর্বিষহ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:০১

‘মামলাবাজ চক্রের’ খপ্পরে পড়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এক কলেজ শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবন। কখনও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় না এসেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মানবপাচার মামলার আসামি হয়েছেন ঢাকার শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল ইসলাম।

তবে মামলার বাদিরও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই মামলার বাদীর অস্তিত্ব আছে কি-না সেটি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক বদরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ‘সাজানো মামলার’ কারণে নিজের দুর্বিষহ জীবনের বর্ণনা দিন তিনি।

বদরুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ নভেম্বর কুলছুমা আকতার নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক নারী আমাকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে জানতে পারি। মামলার আর্জিতে বলা হয়, আমিসহ অন্যান্য আসামিরা বাদীকে মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে ভারতে পাচার করে দেই। গত ২৪ মার্চ বাদী ভারত থেকে ফিরে আসেন এবং পাঁচ মাস পর গত ২০ আগস্ট আমার বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলাটি করেন।

পরবর্তীতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩য় আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকি-আল-ফারাবী মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়ে তিনি নিজেই আমিসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

বদরুল ইসলাম বলেন, মামলার বাদী ও আসামিদের কাউকেই আমি চিনি না। আমি জীবনে কখনও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসিনি। মামলায় কিছু তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। ওইসব তারিখে নাকি আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে বাদীর সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাকে নিয়ে ভারত সীমান্তে গিয়েছি। তারিখগুলোর মধ্যে গত বছরের ৮ নভেম্বর ও চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি আমি আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টারে বিবিএস ও বিবিএ প্রোগ্রামের টিউটর হিসেবে ক্লাস নিয়েছি।

ঘটনায় জড়িত না থাকলেও কীভাবে মামলা হতে পারে সে বিষয়ে একটা আশঙ্কার কথা ব্যাখ্যা করে ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক বলেন, আমাদের কলেজের শিক্ষক আবু নাঈম মো. রাফি, নুরুন্নাহার বেগম, বাদল চন্দ্র অপু শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে গভর্নিং বডিতে দায়িত্ব পালন করেন। তারা কলেজের নামে জমি কেনাসহ বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটা ও আর্থিক কর্মকান্ডে অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে কলেজে আন্দোলন গড়ে উঠে।

বদরুল বলেন, কলেজের অর্থ তসরুপের বিষয়ে আমিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা প্রতিবাদ করি। সেজন্য তারা আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। কলেজ ক্যাম্পাসে আমাকে উদ্দেশ্য করে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, আমার ঘুম হারাম করে দেয়া হবে। মিথ্যা মানবপাচারের মামলার কারণে সত্যি সত্যি এখন আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মামলার কারণে আমি কিছুদিন বাড়িতেও থাকতে পারিনি। সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমিসহ পরিবরের সদস্যদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমি এই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই, পরিবার নিয়ে শান্তিতে বাঁচতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে বদরুল ইসলামের সঙ্গে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :