কারাগারে যেমন আছেন সাহেদ

আশিক আহমেদ,ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:৩৩ | প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৩৩

ব্যবসা-বাণিজ্য ও টেলিভিশনে টক শো নিয়ে এক সময় দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটতো রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের। একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে তিনি কারাগারে অন্তরীণ। নির্জন সেলে নিভৃতেই সময় কাটে তার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এক সময়ের তথাকথিত ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ সাহেদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে কারাগারে তেমন কেউ আসে না। কোনো স্বজন বা বন্ধু-বান্ধব নেয় না তার খোঁজ।

কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানায়, সাহেদকে এককভাবে একটি আলাদা সেলে রাখা হয়েছে। ওই সেলেই অলস সময় কাটে তার।

নিয়ম অনুযায়ী কারাগারে দুই বেলা খাবার দেয়া হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি কারাগার থেকে দেয়া খাবারে নাস্তা সারেন। এরপর সেলের মধ্যেই পায়চারি করে সময় কাটান। কখনও বা আবারও ঘুমিয়ে পড়েন। এভাবেই সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়। হয় বিকেল।

বিকেলে আবারও কারাগার থেকে খাবার দেয়া হয়। সেই খাবারেই চলে রাতের আহার। যদিও কারাবিধি অনুযায়ী কোনো বন্দি চাইলে বাড়তি খাবার কিনে খেতে পারেন।

এক সময়ে টকশো মাতিয়ে রাখলেও কারাগারে কথা বলার মতো তার কোনো সঙ্গী নেই। বিমর্ষ চেহারায় সাহেদকে কারাগারের সেলে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কারারক্ষী।

বহুল আলোচিত রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ জাল-জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে নিজেকে শিল্পপতি হিসেবে জাহির করেন। অন্যদিকে বিদগ্ধ একজন সমাজ বিশ্লেষক হিসেবে বিভিন্ন টেলিভিশন টক-শোতে তিনি হয়ে ওঠেন অতিচেনা এক মুখ। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি হিসেবেও আবির্ভুত হন। এককথায় অর্থ-বিত্ত, যশ-খ্যাতির মাধ্যমে অনেকটা রাতারাতি তিনি নিজেকে নিয়ে আসেন পাদ-প্রদীপের আলোয়। তবে উত্থানের মতোই পতনও যেন ছিল তার ছায়াসঙ্গী।

সাহেদ বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশো করে পরিচিতি পান। কয়েক বছর আগে একটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালান। গড়ে তোলেন হাসপাতালসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ দেশে বিস্তৃত হলে রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন করিয়ে নেন সাহেদ। কিন্তু র‌্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে তার প্রতিষ্ঠান থেকে করোনার জাল সনদ দেয়ার বিষয়টি।

এরপর একে একে বেরিয়ে আসে তার বিভিন্ন অবৈধ বাণিজ্য-বেসাতি, ধান্দাবাজি ও প্রতারণার খবর। এরপরই তিনি গা ঢাকা দেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সীমান্ত পাড়ি দেয়ার প্রাক্কালে গত ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবের একটি দল।

বেশকিছু দিন রিমান্ডে থাকার পর বর্তমানে তাকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, সাহেদকে একজন সাধারণ বন্দি হিসেবেই কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি কোনো ভিআইপি বা ডিভিশন পাওয়া বন্দি নন। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই তাকে আলাদাভাবে একটি সেলে রাখা হয়েছে। যেই সেলে আর কাউকে রাখা হয়নি। কারাবিধি অনুযায়ী কারাগারের ক্যান্টিন থেকে যেকোনো বন্দি বাড়তি খাবার কিনে খেতে পারেন। আপনারা তাকে অনেক কিছুই মনে করতে পারেন। কিন্তু আমাদের চোখে তিনি শুধুই একজন সাধারণ বন্দি।

সাহেদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে ৫০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর বেশির ভাগই প্রতারণার। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলাও হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলার তদন্ত করছে র‌্যাব। সাহেদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরার দেবহাটা থানায় করা অস্ত্র মামলার চার্জশিট ইতোমধ্যে আদালতে দাখিল করেছেন। অন্য মামলাগুলোর তদন্ত চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/এএ/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

কথায় কথায় মানুষ পেটানো এডিসি হারুন কোথায়? থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের তদন্ত কোথায় আটকে গেল?

মজুত ফুরালেই বাড়তি দামে বিক্রি হবে সয়াবিন তেল

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে ইরান-ইসরায়েল সংকট

ছাদ থেকে পড়ে ডিবি কর্মকর্তার গৃহকর্মীর মৃত্যু: প্রতিবেদনে আদালতকে যা জানাল পুলিশ

উইমেন্স ওয়ার্ল্ড: স্পর্শকাতর ভিডিও পর্নোগ্রাফিতে গেছে কি না খুঁজছে পুলিশ

জাবির হলে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে জঙ্গলে ধর্ষণ, কোথায় আটকে আছে তদন্ত?

নাথান বমের স্ত্রী কোথায়

চালের বস্তায় জাত-দাম লিখতে গড়িমসি

গুলিস্তান আন্ডারপাসে অপরিকল্পিত পাতাল মার্কেট অতি অগ্নিঝুঁকিতে 

সিদ্ধেশ্বরীতে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু: তিন মাস পেরিয়ে গেলেও অন্ধকারে পুলিশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :