খোলা ছিল রেলক্রসিংয়ের গেট, ঘুমিয়ে ছিলেন গেটম্যান!

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:০৯ | প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:১৩

কোনো ট্রেন আসার আগেই রেলক্রসিংয়ের গেট লাগিয়ে দেয়া ছিল তার দায়িত্ব। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালন না করে ঘুমিয়ে পড়েন। আর এতেই জয়পুরহাট সদরের পুরানপৈল রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন বাসের ১২ যাত্রী। গুরুতর আহত আরও চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সালাম কবির ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, দুর্ঘটনার সময় রেলক্রসিংয়ের গেট খোলা ছিল। এ সময় ঘুমিয়ে ছিলেন গেটম্যান। তবে গেটম্যানের দায়িত্বে কে ছিলেন সেটা তিনি জানাতে পারেননি।

এসপি জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হবে। কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পার্বতীপুর রেললাইনের পুলিশ সুপার সিদ্দীকি তানজিলুর রহমানও গেটম্যান না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জয়পুরহাট থেকে ছেড়ে আসা বাঁধন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস (বগুড়া জ-১১-০০০৮) হিলি স্থলবন্দরের দিকে যাচ্ছিল। শনিবার সকাল ৭টার দিকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলগেট অতিক্রম করার সময় গেটম্যান গেট না ফেলার কারণে বাসটি রেললাইনের উপর উঠে যায়। সেই সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন সজোরে ধাক্কা দেয়। ট্রেনটি রেললাইন ধরে ছেঁচড়িয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায়। এ সময় বাসে থাকা ১০ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও দুজন।

জয়পুরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়। তাদের অবস্থার অবনতি হলে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম জানান, ১০ জনের লাশ মর্গে আছে, আহত পাঁচজনকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করার পথে দুজনের মৃত্যু হয়।

নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- বাসচালক সদর উপজেলার হারাইল গ্রামের মামুনুর রশিদ, হিচমী গ্রামের মানিকের ছেলে রমজান, পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের সরোয়ার হোসেন, আরিফুর রহমান রাব্বি, আক্কেলপুর উপজেলার চক বিলা গ্রামের দুদু কাজীর ছেলে সাজু মিয়া এবং নওগাঁর রানী নগর উপজেলার বিজয়কান্দি গ্রামের বাবু।

আহত তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- পাঁচবিবি উপজেলার ফারুখ হোসেন, একই উপজেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জিয়া, টাঙ্গাইলের মাটিকাটা গ্রামের শুকুর আলীর জুলহাস।

জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহত ও আহতের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ২০ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।

দুর্ঘটনার পর ওই রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রেলকর্মীরা যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :