খানসামায় মসজিদ-বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:২৭ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:৪৭

নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর)

মসজিদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দিনাজপুরের খানসামায় একটি মসজিদ ভাঙচুর ও গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের হাসিমপুর গ্রামের পালোয়ানপাড়া জামে মসজিদে ঘটে।

এছাড়াও একই উপজেলার ভাবকি ইউনিয়নের সাবেক গুলিয়ারা গ্রামের শাহ্ পাড়ায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গাছ ও ঘর ভাঙার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পালোয়ানপাড়া জামে মসজিদের জমিদাতা ইসমাইল হোসেন শাহ একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মসজিদ নির্মাণের জন্য হাসিমপুর পালোয়ানপাড়া জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ্ নামা দলিল করে দেন। সেই দলিলে উল্লেখ ছিল, তার বড় ছেলে নাজির হোসেনকে তিনি ওয়াকফ্ জমি জমার মোতয়াল্লী বা দায়িত্ব অর্পণ করেন। যাতে মসজিদ দেখাশোনা, দানকৃত জমির খাজনাদি পরিশোধ করেন। এ খাজনা পরিশোধ প্রক্রিয়া তার অবর্তমানে তার ছেলে ও ছেলের বংশানুক্রমে চলতে থাকবে। এরপর নাজির হোসেন মসজিদের পাশে আম, কাঠাল, মেহগনি সহ বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপণ করেন। অথচ পরবর্তীতে গাছগুলো বড় হলে এগুলো বিক্রি করে ভোগদখল করার জন্য তাকে বাদ দিয়ে একটি কমিটি করে গাছ কাটা ও মসজিদ ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়। এ অবস্থায় নাজির হোসেন গত ৬ ডিসেম্বর বিজ্ঞ খানসামা সহকারি জজ আদালতের মাধ্যমে ওই কমিটির সভাপতি আঃ গনিসহ মসজিদের রহিদুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, রবিউল ইসলাম, মাজেদুল ইসলাম, হাছান আলী, ছপেত আলী, সামছল, একরামুল হক, মহসিনকে মসজিদের গাছ কাটা, মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা ও কোন প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি না করতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

নাজির হোসেন জানান, বিজ্ঞ আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিসের পরও তারা গাছ কেটে ফেলে ও মসজিদ ভাঙচুর করে। এ কাজের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

তবে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি আঃ গনিসহ কয়েকজন জানান, মুসল্লীর জায়গা সংকট ও টিন দিয়ে পানি পরার কারণে মসজিদ ভাঙা হয়েছে এবং নাজির হোসেনের জায়গা ফাঁকা রেখেই নতুন করে ছাদ দিয়ে বড় মসজিদ করা হচ্ছে।

এদিকে, ভাবকি ইউনিয়নের সাবেক গুলিয়ারা গ্রামের শাহ্ পাড়ায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে ভাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে গাছ কাটা ও ঘর ভাঙার অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আঃ সামাদ তার বাড়ির সামনে রেকর্ডীয় মালিকের কাছে জমি কিনে ঘরবাড়ি ও গাছপালা লাগিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর সকালে হঠাৎ ছোটভাই মাদ্রাসা শিক্ষক আঃ রশিদ তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, বড়ভাই মোকছেদুল হক, তার ছেলে মাসুদ রানা ও স্ত্রী মাজেদা খাতুন দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঃ সামাদের তিনটি ঘর ভেঙে দেয় ও ১০টি বড় আমের গাছ কেটে ফেলে জায়গাটি দখল করেন। এসময় তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।

আঃ সামাদ বলেন, ‘তারা আমার ভাই। আমি কষ্ট করে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে ওদের দেখার পাশাপাশি জমিটুকু কিনেছি। কিন্তু তারাই আমার বাড়িঘর ভেঙে দিয়ে গাছগুলো কেটে ফেলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার অনেক চেষ্টা করেছি। এজন্য জমি উদ্ধারের জন্য থানার শরণাপন্ন হয়েছি।’

তবে ছোট ভাই আঃ রশিদ বলেন, ‘আমি ২০০৯ সালে মূল মালিকের কাছে ওই জমি কিনেছি। বড়ভাই ভুল দলিল দিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করছেন।’

এ বিষয়ে খানসামা থানার সাব-ইন্সপেক্টর চিত্র রায় বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর ভাঙা ও গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/পিএল)