চট্টগ্রামে জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:৩২ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:৩৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

নগরীর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ‘চট্টগ্রাম মহানগর- বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’আয়োজিত জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

এসময় তিনি বলেন, ইসলামে ভাস্কর্য ভাঙার কথা কোথাও নেই। আমাদের প্রিয় নবী যখন প্রিয় জন্মভূমিতে আসলেন, তখন কাবা শরীফে ৩৬০টি মূর্তি ছিল। তিনি কাবা শরীফে প্রবেশ করে  নামাজ আদায় করতে চেয়েছিলেন। নামাজের সামনে মূর্তি থাকায় নামাজটা সহিহ হবে না, সেজন্য সাহাবিদের বলেছিলেন- মূর্তিগুলো সরাতে। পাথরের মূর্তিগুলো এমনিতে সরানো সম্ভব ছিল না বলে ভেঙে সরাতে হয়েছে। এই একটি ঘটনা ছাড়া ভাস্কর্য বা মূর্তি ভাঙার আর কোন ঘটনা নেই।

তিনি বলেন, সৌদি আরবসহ পৃথিবীর সকল মুসলিম রাষ্ট্রে ভাস্কর্য আছে। কট্টর ইসলামী রাষ্ট্র ইরানেও ভাস্কর্য আছে। এমনকি পাকিস্তানের কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নার ভাস্কর্য আছে। পাকিস্তানে বেনজীর ভুট্টোর ভাস্কর্য আছে। ভাস্কর্যরে সাথে  ধর্মের কোন সাংঘর্ষিক অবস্থান নেই। আমাদের দেশে তথাকথিত ধর্ম  ব্যবসায়ী এই  মৌলবাদীরা মানুষের মধ্যে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফায়দা লুটতে চায়। এসবে সতর্ক থাকতে হবে। আমি আশা করি, আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে।

শ্রদ্ধা অর্জন করতে হয়, শ্রদ্ধা চাপিয়ে দেওয়া যায় না উল্লেখ করে আ. লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, কিছুদিন আগে  দেখলাম একজন বললো আলেমদের সম্মান করে কথা বলতে। আলেমদের তো সম্মান করেই কথা বলতে হয়, আর আমরা তো সেটাই করি। আমাদের বাবা- মা তো শিখিয়েছেন যে কোন মুরব্বিকে সম্মান করার।  আর যে আলেমরা  ধর্ম প্রচার করে তাদের সম্মান করা তো মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব, কিন্তু কোন আলেমদের? ধর্ম ব্যবসায়ী আলেম? যারা ওয়াজের নামে নানা চটকদার কথাবার্তা বলছেন? একজন আরেকজনের উদ্দেশ্যে বলেন যে,

ওরে বাটপার ওরে চিটার- এটা কী আলেমের কথা? এভাবে বলছেন একজন আরেকজন আলেমের বিরুদ্ধে। একজন ওয়াজে বলছেন- বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস হবে না। মুসলমানের দেশে করোনাভাইরাস হতে পারে না।  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস হবে না, হবে না, হবে না। যদি হয় আমি কসম করে বলছি, কোরআন মিথ্যা হবে। এটা কোন আলেমদের কথা? মানুষের তো করোনাভাইরাস হয়েছে এখন কী বলবেন? এ ধরনের যারা মিথ্যা কথা বলে তাদেরকে কীভাবে সম্মান করতে হবে- তা আমার জানতে ইচ্ছা করে। শ্রদ্ধা অর্জন করতে হয়, শ্রদ্ধা চাপিয়ে দেওয়া যায় না। যারা ধর্মের কথা বলে অধর্মের কাজ করে, তাদের কেউ সম্মান করে না।

হানিফ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল জাতীয় চার মূলনীতির উপর ভিত্তি করে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র  এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা। সেই চার বিষয়ে উপর ভিত্তি করে আমাদের সংবিধান রচিত হয়েছে।

জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,  আজকে যারা জিপিএ ৫ পেয়ে এখানে এসেছেন আপনারাই আমাদের আগামীর ভবিষৎ। এখান থেকে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে বড় বড় স্কলার হবে। এখান থেকে রাজনীতিবিদ হতে পারে, সমাজসেবক হতে পারে। চাকরি করে সচিব হতে পারবে বা সর্বোচ্ছ রাজনীতিবিদ হওয়ারও সুযোগ থাকবে। তোমরা যারা শিক্ষার্থী তোমরাই আগামী ভবিষৎ, তোমরাই আগামী দিনের কান্ডারী। সেকারণে আমার একটি ছোট্ট পরামর্শ- লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধুর শিশু কিশোর মেলার চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সাজ্জাত হোসেন।

সংগঠনের সহসভাপতি জাওইদ চৌধুরী ও এম শাহাদাৎ নবী খোকার যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান চৌধুরী, নগর আ. লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সসদ্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রাহমান, কেন্দ্রীয় আ. লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মাহমুদ সালাউদ্দীন চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুণ লুবনা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, নগর যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দীন।

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/এলএ)