দিগন্তজোড়া সরিষা ক্ষেতে ব্যস্ত মৌ চাষিরা

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:২২

দিগন্ত জুড়ে মাঠ হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। যতদূর চোখ যায় কেবল হলুদ আর হলুদ। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন সিরাজগঞ্জে চাষি ও কৃষি বিভাগ। সরিষা চাষিদের পাশাপাশি মৌ-চাষিরাও এবার ভালো উৎপাদনের আশা করছেন এবছর। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে মধু সংগ্রহে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৬৮০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। আর এ থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭১ হাজর ১১৮ মেট্রি টন।

উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, সরিষার ভালো ফলন হবে এমনটাই আশা করছি। কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরামর্শ দিচ্ছে।

কাজিপুর উপজেলার রতনকান্দি গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় কৃষকরা ধান চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষেও আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

মৌ চাষিরা জানান, জেলায় এ বছর প্রায় ২০ হাজার মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার মধু সংগ্রহ বেশি হবে। এই মধু শিল্পের উন্নয়নের জন্য আর্থিক ঋণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানিয়েছেন মৌ চাষিরা। জেলার সরিষা ক্ষেত্র থেকে সংগ্রহ করা উন্নতমানের মধু পাইকারী ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৌ চাষীরা।

আদর্শ মৌ খামারের মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, ৩০০ মৌ-বক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মণ মধু সংগ্রহ করা যায়। সরিষার ক্ষেত্রে মৌ-বক্স স্থাপনের কারণে সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পায়।

পাবনা থেকে আসা মৌ চাষী আশরাফুল ইসলাম জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসেন পাইকার ব্যাবসায়ীরা। তবে মধু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় কাঙ্খিত দাম না পান না তারা।

মাঠে মধু ক্রয় করতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই আমি মাঠে থেকে ভাল মধু সংগ্রহ করি। এ বছর প্রায় ১০ কেজি মধু সংগ্রহ করব। এই মধু সারা বছর পরিবার নিয়ে ব্যবহার করি। মাঠ থেকে মধু ক্রয় করলে ভেজাল মুক্ত মধু পাওয়া যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আবু হানিফ জানান, সরিষা বীজ ও সারে সরকারের প্রণোদনা থাকায় কৃষকরা আগ্রহী হয়েছে সরিষা চাষে। কিন্তু তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বন্যার পানি দেরীতে নামায় ও বৃষ্টির কারণে সরিষা আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে জেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে। এই মৌ বাক্সের মধু থেকে কৃষকরা বাড়তি আয় করেন। খেতে মৌ বাক্স স্থাপনে মৌ-মাছির পরাগায়নের মাধ্যমে ১০ শতাংশ ফসলের ফলন বেশি হয় বলে তিনি জানান।

ঢাকাটাইমস/২৩ ডিসেম্বর/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :