বাংলা চ্যানেল জয়ী রাব্বির স্বপ্ন অলিম্পিক

এনাম আহমেদ, বগুড়া
 | প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:২৪

‘যখন আমি বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছিলাম তখন আমার মনেই ছিলো না আমি সাগরে সাঁতার কাটছি। আমার ভেতরে কোনো ভয় কাজ করেনি সে সময়। কারণ আমার সামনে শুধু একটাই লক্ষ্য ছিলো বাংলা চ্যানেল পার হওয়ার। বাংলা চ্যানেলকে জয় করার। আমি বড় হয়ে অলিম্পিক খেলতে চাই। বাংলাদেশের পতাকা পুরো পৃথিবীর সামনে উচু করে ধরতে চাই।’ বাংলা চ্যানেল জয়ী ১৩ বছর বয়সী কিশোর বগুড়ার রাব্বি রহমান সম্প্রতি এভাবেই তার লক্ষ্যের কথা জানালো সাংবাদিকদের।

রাব্বি রহমানের বেড়ে ওঠা বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী মধ্যপাড়ায়। বাবা সাঁতারুদের প্রশিক্ষক হওয়ার সুবাদে রাব্বি রহমান মাত্র সাড়ে ৩ বছর বয়স থেকে সাঁতার শুরু করে। এরপর থেকেই তার বাবা আলালুর রহমান তিব্বত নিয়মিত সাঁতার কাটতে অভ্যস্ত করে তোলেন। বগুড়ার সুবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এই শিক্ষার্থী প্রতিদিন ৫ ঘণ্টার মতো নিজ এলাকার একটি মাদ্রাসার পুকুরে সাঁতার কাটে। সাঁতার প্রতিযোগিতা অংশ নিয়ে এ পর্যন্ত স্থানীয় এবং জাতীয় সব মিলিয়ে ২৬টি গোল্ড মেডেল জয় করেছে। এছাড়া সিলভার এবং ব্রোঞ্জ মেডেল কতগুলো জিতেছে তার হিসেব নেই।

গত ৩০ নভেম্বর টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয় রাব্বি। তার সঙ্গে আরো ৪৩ জন সাঁতারু বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন। তবে সবচেয়ে কম সময়ে সবার আগে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার গৌরব অর্জন করে রাব্বি রহমান। ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে পৌঁছাতে সক্ষম হয় সে। ।

রাব্বির সফলতায় এখন বাংলা চ্যানেল জয় করার স্বপ্ন দেখছেন বগুড়ার মিনার, গোলাম মোরসালিনসহ আরো অনেক কিশোর সাঁতারু। তারা জানান, রাব্বি আমাদের সাথেই সাঁতার প্র্যাকটিস করে। ও সবাইকে পেছনে ফেলে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের এবং গর্বের। তার এই জয়ে আমরাও স্বপ্ন দেখছি একদিন ওর মতোই কিছু করবো।

রাব্বির বাবা সাঁতার প্রশিক্ষক আলালুর রহমান তিব্বত বলেন, রাব্বিকে সাড়ে ৩ বছর বয়সেই সাঁতার শেখাই। এরপর থেকে ওকে একজন সাঁতারু হিসেবে গড়ে তুলছি। প্রতিনিয়ত সে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছে। ছেলেকে নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখছি সে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবে। আমি খুব আশাবাদী। তবে সরকারি সহযোগিতা এবং অনুমতি প্রয়োজন। আমার পক্ষ থেকে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ছেলেকে ইংলিশ চ্যানেলে নিয়ে যাওয়ার।

রাব্বির মা আমেনা বেগম জানান, যখন ও সমুদ্রে নামে সে সময় আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। আমি দোয়া দরুদ পড়ছিলাম। পরে যখন জানতে পারি ছেলে আমার সফল হয়েছে। তখন আমি কেঁদে ফেলি।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাব্বিকে আমাদের টেককেয়ার করা উচিত শুধুমাত্র বাংলাদেশের সম্পদ হিসেবে নয়। সে তো আমাদের জাতীয় সম্পদ বটেই। তবে দক্ষিণ এশিয়ার একজন সেরা সাঁতারু হিসেবে তাকে গড়ে তুলতে হলে রাব্বিকে মূল্যায়ন করতে হবে।

ঢাকাটাইমস/২৪ ডিসেম্বর/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :