বগুড়ার শিমুল হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
বগুড়ার শিমুল মিয়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মামলার প্রধান আসামি শিবগঞ্জের বিহার ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুলকে গ্রেপ্তার ও তার বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার বন্দরে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।
প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তারা বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা চেয়ারম্যান মহিদুলের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। এছাড়া তার ছবি সংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড আগুনে পোড়ায়। এ সময় এলাকাবাসী বিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুলের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
বিক্ষোভের সময় তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, হত্যা, চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক মানুষের জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে মহিদুল ও তার বাহিনী। সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার জুলুম-নির্যান চালিয়ে গেলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে এলাকার নির্যাতিতরা আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পায় না।
মানববন্ধনে নিহতের ভাই বিহার ইউপি সদস্য রায়হান ইসলাম অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই শিমুল মিয়া একটি মামলায় ২১ ডিসেম্বর বগুড়া আদালতে হাজিরা দিতে যান। হাজিরা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাকে মাইক্রোযোগে অপহরণ করে হয়। পরে শিমুলকে হত্যার পর বস্তায় ভরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলীপুর নামক এলাকায় ফেলে রেখে যায়।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তাদের জানালে তিনি তার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। এরপর সোমবার রাতেই তিনি বাদী হয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলামসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
ভাসুবিহারের আব্দুল ওহাব অভিযোগ করে বলেন, তিনি একটি ট্রাক কিনলে মহিদুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় তাকে মারপিট করে এবং স্ট্যাম্পের উপর স্বাক্ষর নিয়ে হুমকি দেয়। পরে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করে।
সোহাগ নামের এক ট্রাক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন তার কাছ থেকে মহিদুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী জোর করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেয়। এছাড়া বিহার বন্দরে সীতারাম কানু নামের এক ব্যক্তির জায়গা জোর করে দখলে নিয়ে সেখানে মহিদুল একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করছে।
এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, এর আগে মহিদুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী সংসারদিঘীতে যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক ও মেহেদুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করলে ওমর ফারুক নিহত এবং একই ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করে জীবন-যাপন করছে মেহেদুল।
গত বছরের প্রথমদিকে কাজী কোল্ড স্টোরের ম্যানেজারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস মন্ডল জানান, লাশ উদ্ধার হয়েছে গোবিন্দগঞ্জে। মামলাও সেখানে হয়েছে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা মানববন্ধন করেছেন। যেহেতু মামলাটি গোবিন্দগঞ্জ থানায় হয়েছে সেহেতু এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি তদন্ত সাপেক্ষে কাউকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের কাছে সহযোগিতা চান তাহলে আমরা তাকে আসামি গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করতে পারবো।
(ঢাকাটাইমস/২৪ডিসেম্বর/কেএম)