রাতের আঁধারে সবজি বাগান কেটে দিলো দুস্কৃতিকারীরা

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চরশোলাকিয়া (বাগপাড়া) এলাকায় রাতের আঁধারে স্থানীয় চাষির ফুলে-ফলে সুসজ্জিত সবজি বাগানের সম্পূর্ণ শিম ও লাউ গাছ কেটে ফেলেছে দুস্কৃতিকারীরা। এতে তার প্রায় দেড় লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

স্থানীয়রা বলেন, গত মঙ্গলবার রাতের আঁধারে স্থানীয় চাষি মো. নুরুল্লার ৩৫ শতক জমিতে ফুলে-ফলে ভরপুর সুসজ্জিত সবজি বাগানের সম্পূর্ণ শিম ও লাউ গাছ কেটে দেয় দুস্কৃতিকারীরা। এমন চিত্র দেখলে পাষাণের চোখেও জল এসে যাবে।

এমন সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল ১০টায় এলাকাবাসী ভিড় জমায় ওই বাগানে। ধারনা করা হয় এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই দুস্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান এলাকাবাসী।

নিজস্ব জমি ও পুঁজি না থাকায় ঋণ করে এবং সুদে টাকা এনে চাষি নুরুল্লাহ্ নয় কাঠা জমি লিজ নিয়ে সবজির মৌসুমে বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। পরে বাগানে উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ ও লভ্যাংশ দিয়ে সংসার চালান। কিন্তু রাতের আঁধারে এসব সবজি গাছ কেটে ফেলায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন চাষী নুরুল্লাহ্।

সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে ছুটে আসেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মাহবুবুর রহমান। তার দেয়া তথ্যে দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জমি দেখতে আসেন সদর উপজেলা কৃষি অফিসার জামাল উদ্দীনসহ কিশোরগঞ্জ থানা-পুলিশ।

চাষি নুরুল্লাহ্ অশ্রুভেজা চোখে বলেন, আমার নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন মৌসুমে সবজি উৎপাদন করে আমি আমার সংসার চালাই। এবার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বিষমুক্ত দেশি শিম ও লাউ আবাদ করি।

তিনি বলেন, বাগানের প্রতিটি বাড়ন্ত গাছের গিরায় গিরায় ফুল দেখে অনেক স্বপ্ন দেখি আমি। এই স্বপ্ন বাস্তব হতে গত দুদিন আগে প্রথম উৎপাদিত ১০ কেজি শিম বাজারে বিক্রি করি এক হাজার টাকায়। আমার এই স্বপ্ন একদিনেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। এখন আমি দিশেহারা। কী করবো কিছুই বুঝতে পারছিনা। কিভাবে শোধ করব আমার ঋণের বোঝা।

নুরুল্লাহ বলেন, আমি কৃষি বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এই দুস্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে যেন শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/কেএম)