চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন দেয়াল ধসে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
চট্টগ্রাম মহানগরের জুবিলী রোড এলাকায় দেয়াল ধসে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন মো. সালাউদ্দিন এবং মো. শুক্কুর।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন ঢাকা টাইমসকে জানান, শ্রমিক সালাউদ্দিন ঘটনাস্থলে এবং শুক্কুর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান।
ওসি বলেন, নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের পাশেই একটি খোলা জায়গায় সীমানা দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছিল। স্থানটি গির্জার মাঠ নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। সেখানে আগে পাহাড়ি টিলা ছিল। সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠান সরকারি জায়গাটি লিজ নিয়ে মাটি কেটে সমান করে। এখন চার পাশে সীমানা প্রাচীর দেয়ার কাজ চলছে।
ওসি মহসিন বলেন, নির্মাণাধীন প্রাচীর ভেঙে একজন মৃত্যুর খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এখান থেকে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ২টার দিকে শুক্কুর মারা যান।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি সাহেদ নামে এক ব্যক্তি দুই বছরের জন্য জায়গাটি লিজ নিয়ে সেখানে অস্থায়ীভাবে গোডাউন নির্মাণ করছিলেন।’
সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমএ মালেক জানান, দুবাই-বাংলা করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান জায়গাটি ইজারা নিয়েছিল।
মৃত সালাউদ্দিনের বড় বোন রিমা আক্তার জানান, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সালাউদ্দিন তার বাসায় থাকেন। গত এক মাস ধরে তিনি এখানে কাজ করছিলেন। যে স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সে এলাকাটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের অধীনে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা নির্মাণ কাজে গাফিলতিকে এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেন।
ফায়ার সার্ভিসের নন্দন কানন স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী জানান, নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীরটি এখনো শক্ত হয়নি। প্রাচীর শক্ত হওয়ার আগেই সেখানে মাটি ভরাট করা হয়েছে। নির্মাণ কাজে গাফিলতির কারণেই এ দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে এসেছিলেন মো. মনির নামে দুবাই বাংলা করপোরেশনে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি। তিনি জানান, সেখানে ভাড়া দেয়ার জন্য অস্থায়ী গুদাম তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাদের। মাটি ধস না হওয়ার জন্য মাঠের চারদিকে সীমানা প্রাচীর তৈরি করা হচ্ছিল। দুবাই বাংলা করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানটি আবাসন ব্যবসা, ইটভাটাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মনিরকে তাদের হেফাজতে নিয়ে গেলেও তাকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে জানান ওসি মহসিন।
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এএ/জেবি)