জামালপুরে চিকিৎসক ধর্মঘটে রোগীদের দুর্ভোগ

প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:১৮

সোলায়মান হোসেন, জামালপুর

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসকদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকায় ভেঙে পড়েছে জেলার চিকিৎসাব্যবস্থা। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখো মানুষ। গুরুত্ব ও মুমূর্ষু অনেক রোগী সেবা না পেয়ে হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগী ও স্বজনরা।

জামালপুর শহরের ডাকপাড়ার বাসিন্দা জান্নাত বেগম দেড় বছরের শিশু কন্যার চিকিৎসার জন্য আসেন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে। বহির্বিভাগে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে।

শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার জবেদা খাতুন হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, `আইসে ঘুরে গেলাম, চিকিৎসা করতে পারলাম না। ডাক্তার এখন কবে আসবো আমি তো জানি না। আমার কিডনির সমস্যা। অপারেশন করা দরকার। খুবই কষ্টে আছি আমরা। এইভাবে চলতে পারে না। এই ধর্মঘট কবে শেষ হবে?‘

শুধু জবেদা খাতুন নয়। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা শত শত রোগীকে চিকিৎসা না পেয়ে এভাবেই চলে যেতে হচ্ছে। আবার অন্ত:বিভাগে ভর্তিকৃত রোগীরাও চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। জরুরি বিভাগের নামমাত্র চিকিৎসাসেবা দেয়া হলেও রোগী শূন্য হয়ে পড়ছে অন্ত:বিভাগ।

তবে জামালপুর আড়াইশ’শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য জরুরি ও অন্ত:বিভাগের সেবা চালু রয়েছে।

তিনি বলেন, ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়নি। সুষ্ঠু বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

গত ২৫ ডিসেম্বর একজন নারী রোগীর মৃত্যু ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা-ভাঙচুর ও কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর এবং সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার ও দোষীদের শাস্তিসহ ৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে জামালপুরের সকল চিকিৎসক।

অপরদিকে, চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু, রোগীর স্বজনদের ওপর হামলা এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মৃত রোগীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

মঙ্গলবার দুপুর ১টায় শহরের বকুলতলা চত্বরে জামালপুরবাসীর ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে এলাকাবাসীর পক্ষে শামীম আহম্মেদ, বিজু, হিরু, সোহেল, রয়েল ও রানা ম্যানশন বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডাক্তারদের অবহেলায় করিমন নেছার মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে চিকিৎসকরা করিমন নেছার স্বজনদের ওপর হামলা, মারধর এবং মামলা করে।

বক্তারা অতি দ্রুত এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রেপ্তারদের মুক্তি এবং দোষী ডাক্তারের শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে।

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এলএ)