ব্যয়ের দ্বিগুণ টাকা জমা সরকারি কোষাগারে

১৫ বছরেও টোলমুক্ত হয়নি সেতুটি

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৪৩ | প্রকাশিত : ০১ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৫৭

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বানার নদীর ওপর নির্মিত ফকির মজনু শাহ্ সেতু নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ১৫ বছরে সেতুর ইজারা বাবদ সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা। তবে, এখনও টোলমুক্ত হয়নি সেতুটি।

এদিকে, গত ২৩ ডিসেম্বর সেতু কর্তৃপক্ষ গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগে সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায়ের নিমিত্তে আগামী তিন বছরের জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেতুটি ইজারা দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বানের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন যানবাহন মালিকরা। তারা সেতুটি টোলমুক্তির দাবি জানান।

গাজীপুর সড়ক বিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, বিএনপি সরকারের সাবেক পাটমন্ত্রী প্রয়াত আ.স.ম হান্নান শাহের প্রচেষ্টায় ১৯৯৩ সালে কাপাসিয়ার বানার নদীর উপর সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ৩৯০ দশমিক ৯১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করতে সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। কাজ শুরুর প্রায় ১২ বছর পর ২০০৫ সালের ৫ আগস্ট সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে নদীর দুইপাড়ের লোকজনের চলাচল ও মালামাল পরিবহন যেমন সহজ হয়ে উঠেছে, তেমনি ঢাকা থেকে কাপাসিয়া হয়ে কিশোরগঞ্জ, নরসিংদীর মনোহরদী, ময়মনসিংহের গফরগাঁও এবং বৃহত্তর সিলেটের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে সেতুটি পার হতে গেলে বড় লরির টোল দিতে হয় ২৮০ টাকা, ট্রাক ১৪০ টাকা, বড় বাস ৯০ টাকা, মিনিবাস ও পিকআপ ৫০ টাকা, মাইক্রোবাস ৪০ টাকা, প্রাইভেটকার ২০ টাকা, সিএনজি অটোরিকশা ১০ টাকা ও মোটরসাইকেলকে দিতে হয় পাঁচ টাকা করে।

সরেজমিনে কথা হয় পরিবহন মালিক সমিতি, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ির মালিক এবং বিভিন্ন যানবাহন চালকদের সঙ্গে।

জলসিঁড়ি এক্সপ্রেস পরিবহনের পরিচালক চিত্তরঞ্জন সাহা জানান, তাদের পরিবহনের বাস চলাচল করতে এ সেতুতে প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার টাকা টোল দিতে হয়। এ সেতু টোলমুক্ত ঘোষণা করতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলে অতি সত্বর যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি।

অনন্যা ক্লাসিক পরিবহনের এম ডি বাবুল খান জানান, বর্তমানে ঢাকা-কাপাসিয়া- কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়ক ও ঢাকা-কাপাসিয়া- মনোহরদী সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সাতটি পরিবহন কোম্পানির প্রায় সাড়ে তিনশত যাত্রীবাহী বাস দিন রাত চলাচল করে। এ সেতু টোলমুক্ত হলে তারা করোনার এ সংকটকালে পরিবহন ব্যবসার আর্থিক ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন।

আন্তজেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন কাপাসিয়া শাখার সভাপতি আকরাম হোসেন খান জানান, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিক্সা, ট্রাক ,টলি, লরি, নসিমন, মোটরসাইকেলসহ হাজার হাজার যানবাহন এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয়। যেহেতু সরকারের নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণেরও বেশি টাকা উঠে যাওয়ায় এ সেতুকে টোলমুক্ত ঘোষণার জোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সাইফউদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত সেতুটি সরকারের ইজারার তালিকাভুক্ত হিসেবেই রয়েছে। তিনি যে দরপত্র আহ্বান করেছেন, তা বাস্তবায়ন হবে আগামী জুন মাসের পর থেকে। যেহেতু বিষয়টি জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে পরবর্তী সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।

(ঢাকাটাইমস/১জানুয়ারি/পিএল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :