প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নার্সারি

আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:৫৮

মানিকগঞ্জে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নার্সারি গড়ে তুলেছে মানিকগঞ্জ ডিজেবল পিপল’স অরগানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্ট (এমডিপিওডি) । বেসরকারি এই সংস্থাটি সদর উপজেলার বেউথা এবং ল’ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তাদের নার্সারি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই দুই নার্সারি থেকে যা আয় হয়, তা ব্যয় করা হয় প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই দুই নার্সারিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ, ওষুধি, ফুলের প্রায় আশি-নব্বই হাজার গাছ রয়েছে।

এমডিপিওডি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আয়বর্ধনমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মানিকগঞ্জ সদরের ল’ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ২০০৭ সালে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির উপর গড়ে ওঠে এই নার্সারিটি। অন্যদিকে বেউথা এলাকায় যে নার্সারিটি রয়েছে সেটা মূলত চারা উৎপাদনের সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দুটি নার্সারির জায়গা ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে জায়গার মালিককে সাত হাজার টাকা করে দিতে হয়।

নার্সারির ম্যানেজার আক্তার আলী জানান, মানিকগঞ্জের মধ্যে সব থেকে বড় নার্সারি এটি। এই নার্সারিতে প্রায় ৪০০ প্রজাতির ফুল, ফল, ওষুধি, ভেষজ, বনসাই ও কাঠ গাছের চারা আছে। এখানে পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা দামেরও গাছ আছে। আমিসহ এখানে মোট সাতজন কর্মচারি কাজ করেন। মাসে গড়ে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার গাছের চারা বিক্রি হয়। নার্সারির ভাড়া, কর্মচারির বেতন ও গাছের চারা উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে যা লাভ হয়, তা সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।

নার্সারির শ্রমিক কাজী আব্দুল আজীজ বলেন, ‘আমার একটা পা নেই। আমি কোন ভারী কাজ করতে পারিনা বলে ইন্তাজ স্যার আমাকে নার্সারি দেখাশোনার কাজ দিয়েছেন। প্রতিমাসে আমাকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। এই নার্সারিতে কাজ করেই আমার সংসার চলে। আমার মত আরো তিনজন এখানে কাজ করে।’

নার্সারি থেকে গাছের চারা কিনে ভ্যানে নিয়ে বিক্রি করে বেড়ান মোহাম্মদ আলী আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে আমি এ পেশায় আছি। ভ্যানে করে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ফল, ফুল ও কাঠ গাছের চারা বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন আমার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। শীতকালে ফুলসহ বিভিন্ন গাছে চারা বিক্রি বেশি হয়। তখন প্রতিদিন লাভও বেশি হয়।’

গাছ কিনতে আসা মেহের নিগার সুলতানা, সানজিদা রহমান, মারিয়া তাবাসছুম, রাশেদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন জানান, এই নার্সারিতে প্রায় দেশি-বিদেশী নানা ধরণের গাছ পাওয়া যায়। ছোট, বড় বাগান থেকে শুরু করে ছাদ বাগান বা বেলকুনিতে ঝোলানের জন্যও গাছ পাওয়া যায় এখানে। প্রতিটি গাছের দামও নাগালের মধ্যেই।

এমডিপিওডি’র পরিচালক ইন্তাজ আলী বলেন, ‘এমডিপিওডি ২০০৩ সালে জেলা সমাজসেবার নিবন্ধন পায়। এটি একটি বেসরকারি প্রতিবন্ধী সংগঠন। আমাদের সংগঠনে প্রায় এক হাজার ৭০০ প্রতিবন্ধী রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে এখন আর সংগঠন চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। যার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রতিবন্ধীদের সংগঠনটির কার্যক্রমকে টেকসই করার জন্য এই নার্সারি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।’

ইন্তাজ আলী বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। তারাও কোন না কোনভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। তাদের প্রয়োজন শুধু মানবিকতা আর কাজ শেখার সুযোগ। সবাই যার যার অবস্থান থেকে তাদের একটু সহায়তা করলে তারাও দেশের মানব সম্পদে পরিণত হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :