ষড়যন্ত্র নামক যন্ত্রের গর্বিত আবিষ্কারক আমরা
এদ্দিন ধরে আমরা করেছি একটা যন্ত্র আবিষ্কার,
সেই যন্ত্রটা যদিও কুড়ায় নিন্দুকদের তিরস্কার,
সেই যন্ত্রের তন্ত্রে-মন্ত্রে সব কানাগলি পরিষ্কার,
এর জজবাতে পদে পদে মিলে জিন্দাবাদের পুরস্কার।
এই যন্ত্রটা আর কিছু নয়; ' ষড়যন্ত্র ' ই নামটা তার,
‘মুশকিল আসান’ এই যন্ত্রকে হাজার সালাম-নমস্কার।
আজব এ যন্ত্রের আছে চাকা লিভার দন্ড ও কপিকল,
চোদ্দ প্যাঁচের স্ক্রুসহ আছে গোঁজ ও আনত তল।
কন্সপিরেসি থিওরি'র বলে এই যন্ত্রের চল,
অটোমেশনের আওতায় দম দেয় কূটকৌশল।
এখানে ওখানে চলছে গভীর ষড়যন্ত্রের হুংকার,
ষড়যন্ত্রের কারণে রাজ্যে আগুন জ্বলছে লংকার।
এদিকে ওদিকে যখন দেখছি সুবিধা খানিক কম,
ষড়যন্ত্রের ইঞ্জিনে তখন কষে কষে দেই দম।
নিজের সুবিধা-কাঁচামালে চলে ষড়যন্ত্রের কল,
মিথ্যার তেল জ্বালানীর বলেই মিলে এর ফলাফল।
শুধু তাই নয়; আছে আরো কতো মস্ত তেলেসমতি,
ছুতা বা ওজর যেনো এ-জাতির অগতির শেষ গতি।
বিশ্বজোড়া সব মানুষের কাজের দুখানা হাত,
আমাদের হাতে নেই সেই জোর কাজের সমানুপাত।
তাইতো আমরা জাতিগতভাবে পেয়েছি তৃতীয় হাত,
'অজুহাত' নামের সেই হাত যেনো ওজরের ইস্পাত।
হাতের এখন আকাল ভীষণ সদরে ও অন্দরে,
হুজুগের দেশে অজুহাতই থাকে জামাইয়ের সমাদরে।
একটা অস্ত্র আছে আমাদের জাতিগত অধিকারে,
নিজের অস্ত্রে না কুলালে আনি পরের অস্ত্র ধারে।
সেই অস্ত্রের নাম জানি সবে, আবেগী 'অশ্রুপাত',
সব হাতিয়ার নিষ্ফল হলে অশ্রুতে কুপোকাত।
ব্রহ্মার সেই অস্ত্রেও নেই এখন আর কোন ধার,
অশ্রু ঝরিয়ে মিলেনা মোটেও দুঃখের অংশীদার।
অশ্রু কেবল অস্ত্র যে হয় অধম ও অক্ষমের,
অশ্রুর অস্ত্রে বিজয় কামনা বিরোধী বীরত্বের।
প্রগতির পথে কে নেবে তোমায়,যদি নিজে হও অক্ষম,
সময়ের রথে সাফল্য আনে মেধা, বুদ্ধি ও শ্রম,
শ্রমের শক্তি, মেধার বল; সবি যদি যায় খোয়া।
গোলায় ভরবে সিসিং ফাঁকের ভূতের হাতের মোয়া।