সৈয়দপুরে ক্যাম্প বলে কিছু থাকবে না: জাপা প্রার্থী

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৫৩

‘সৈয়দপুরে ক্যাম্প বলে কিছু থাকবেনা, ক্যাম্পবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়ন ঘটিয়ে তাদের স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’

এমন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী শিল্পপতি সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক। গত সোমবার রাতে সৈয়দপুর পৌর শহরের নতুন বাবুপাড়া কলিম মোড় এলাকায় এক নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পবাসী জনগোষ্ঠীরাও আমাদের মতই মানুষ। অথচ দীর্ঘদিন থেকে তারা ক্যাম্পের ঘিঞ্জি পরিবেশে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভোটার হিসেবে তাদের ভোট নিয়ে ইতোপূর্বে অনেকেই নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি আজও প্রতিপালন করেনি। বরং ৫ বছর দূর্নীতি করে অবৈধভাবে টাকা আয় করে নির্বাচনের সময় ১ হাজার টাকা দিয়ে ক্যাম্পের মানুষদের ভোট কিনে আবারও মেয়র নির্বাচিত হন। ফলে ক্যাম্পবাসীর স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। যে কারণে তারা শিক্ষার দিক দিয়ে এগিয়ে গেলেও তাদের মানবেতর জীবনযাপনের কোন পরিবর্তন ঘটেনি। আমি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলে এই দিকটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সৈয়দপুর থেকে সকল ক্যাম্প বিলুপ্ত করে তাদের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত পরিবেশে বসবাসের ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি তাদের নাগরিক জীবনের মূলধারায় এনে সৈয়দপুরের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত করব।

তিনি আরও বলেন, ‘লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে সৈয়দপুরবাসী আমাকে তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে পৌর পরিষদের দায়িত্ব দিলে, আমি তাদের প্রধান প্রধান দাবিগুলো পূরণ করব।’

তিনি উল্লেখ করেন যে, ‘দেশের অষ্টম বৃহৎ বাণিজ্য নগরী সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে যে ভোগান্তি রয়েছে তা সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করে দেব। এজন্য তাদের ৯ মাস বা ৫ বছর ঘুরতে হবে না। বরং তাদের দোড়গোঁড়ায় এ সংক্রান্ত সেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। একইভাবে পৌরসভার অন্যান্য সেবাগুলোকে আরও সহজতর ও জনবান্ধব করা হবে। যাতে পৌরবাসী কোন প্রকার ভোগান্তির শিকার না হয়।’

উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সিদ্দিকুল আলম বলেন, ‘সৈয়দপুরবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি, সৈয়দপুরে একটি শিশু পার্ক। তাদের এ দাবি যুক্তিসঙ্গত হলেও দিনের পর দিন এটি করার কথা বলে প্রতিটি বাজেটে প্রস্তাবনা রাখলেও আজও তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। আমি এটি বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিতে চাই, পৌরবাসী আমাকে নির্বাচিত করে কোন ভুল করবেন না। তাদের প্রতিটি ন্যায্য দাবি পূরণ করাই হবে আমার প্রধান দায়িত্ব। তাই নির্বাচিত হওয়ার পর পরই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেব। সেসঙ্গে পৌরসভার নিজস্ব ভবন নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে পৌর পরিষদ স্থাপন করা হবে। যাতে পৌরসভার ভবনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ভাড়া বাবদ যে ব্যয় হয়, তা রোধ করে ওই অর্থ জনগণের সেবার কাজে ব্যয় করা সম্ভব হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবারগতভাবে ব্যবসায়ী। আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই অসংখ্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৫ হাজার মানুষ আমার দ্বারা জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পেয়েছেন। আগামীতে মেয়র নির্বাচিত হলে এই সুযোগ আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। কেননা ব্যক্তিগত সদিচ্ছার পাশাপাশি যদি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকে তাহলে যে কোন ভালো কাজ আরও বহুগুণ করা সম্ভব হয়। সৈয়দপুরে শিক্ষিত বেকার বলে কেউ থাকবেনা ইনশাআল্লাহ।’

লাঙ্গল প্রতীকের এ প্রার্থী বলেন, ‘সৈয়দপুর পৌরসভার জন্য রেলওয়ের ২৫ একর জমি তৎকালীন জাতীয় পার্টির নেতা ও পৌর চেয়ারম্যান মরহুম ইজাহার আহমেদ অধিগ্রহণ করেছিলেন। উক্ত জমির উপর আমি সমূহ উন্নয়ন ঘটিয়ে সৈয়দপুরে আমূল পরিবর্তন ঘটাতে চাই। যাতে করে এক সময়ের সিটি শহর সৈয়দপুর আবারও তার পূর্বের মর্যাদায় ফিরতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি, সৈয়দপুরকে একটি আধুনিক ও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তুলে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে ব্যবসায়িক ও সামাজিক দিক দিয়ে এগিয়ে নিতে। এজন্য আমি আরও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করে আগামীর পরিবর্তনশীল বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক উন্নয়নের পথে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে। তাই আপনাদের সুচিন্তিত মতামত তথা লাঙ্গল মার্কায় একটি ভোট প্রত্যাশা করছি।’

এদিকে তিনি এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নারী প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একজন নারীকে রান্নাঘর থেকে নিয়ে এসে তাদের প্রার্থী করেছেন। তিনি কি সৈয়দপুরের মত প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা পরিচালনা করার যোগ্যতা রাখেন? আপনারাই তা বিবেচনা করে দেখেন। তাছাড়া যে কোন গুরুত্বর সময়ে তিনি কি রাত বিরাতে জনগণের সহযোগিতায় তাদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারবেন? আপনারাই চিন্তা করে দেখেন, আপনাদের বিপদে-আপদে কে পাশে এসে দাঁড়াবে। আমি ইতোপূর্বেও নানা সময়ে আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, এখনও আছি, আগামীতেও থাকব। আমি শুধু আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে সেবা করতে চাই। আমাকে সে সুযোগটুকু দেন। আমার দ্বারা যদি কোন প্রকার অনিয়ম দূর্নীতি পান তাহলে আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে সরে আসব। আমার কোন লোকও যদি কোন রকম অপকর্মের সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হয় তাহলেও তার যথাযথ বিচার ও আমার নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় থাকবে।’

(ঢাকাটাইমস/৫জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :