নিপুণ হাতে বাঁশ বেতের কাজ করে স্বাবলম্বী রুবেল

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:৫৫

আশরাফ আহমেদ, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)

অভাবের সংসারে লেখা পড়ায় খুব একটা এগুতে পারেনি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম ধুলজুরী গ্রামের রুবেল। আর্থিক অস্বচ্ছলতায় কিশোর বয়সেই রুবেল বেছে নেয় বাঁশ-বেতের কাজ। এখন বাঁশ বেতের একজন দক্ষ করিগর রুবেল। বাড়ি বসেই মাসে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় তার।

বাঁশ বা বেতের ঝুড়ি-টুকরিসহ নানা জিনিস বাড়িতে বসেই তৈরি করেন তিনি। তবে দুই এক দিন পর পর গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাঁশ কিনতে হয় তার। তারপর সেই বাশ বাড়িতে এনে তার থেকে তৈরি করেন ঝুড়ি-টুকরি-খাঁচা। সংসারের ফাঁকে সযোগ পেলে  স্ত্রী রুমেলা হাত লাগান রুবেলের সঙ্গে। 

রুবেল জানান, তার তৈরি টুকরি স্থানীয় ভাবে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার ইটের ভাটায় ও বিল্ডিং ঢালাইয়ের কাজে তিনি টুকরি সরবরাহ করেন। একটি মাঝারি ধরনের টুকরি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। এতে তার মাসিক আয় হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ উপার্জন দিয়ে সে সংসারের খরচ ও তিন মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। রুবেলের দেখাদেখি গ্রামের অনেক বেকার যুবক এ পেশায় এগিয়ে এসেছেন।

তবে রুবেলসহ তারা চাপে পড়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। 

রুবেলের প্রতিবেশী বাদল মিয়া জানান, একজন দক্ষ বাঁশ বেতের কারিগর রুবেল নিজের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করে সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন জানান, পৌরসভায় রুবেলের মতো আরও অনেকেই এ কুটির শিল্প কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তবে সরকারের সামান্য পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে তারা তাদের ভাগ্য বদলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এহসানুল হক জানান, পশ্চিম ধুলজুরী গ্রামের বাঁশ বেতের কারিগর রুবেলের মতো আরও ৩৬জন কারিগরদের নামের জরিপ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে সাবলম্বি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

হোসেনপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.আবুল কাশেম  বলেন, ‘উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরি করে অনেক পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এনেছেন। অন্যান্য স্থানেও এই কাজ করে  স্বাবলম্বী হতে পারেন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। উপজেলায় অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে সরকারি ঋণ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে যদি কারো সরকারি ঋণের প্রয়োজন পড়ে তাহলে  যোগাযোগ করার জন্য বলেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/ ৬ ডিসেম্বর / পিএল