নানা অভিযোগে মামলা বাড়ছে প্রতিযোগিতা কমিশনে
র্যাংগস, আইডিয়াল স্কুল, ডিএনএস সফটওয়্যার, বিমা কোম্পানিসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে
বাংলাদেশে ইকেলকট্রক পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান র্যাংগস সনি গ্রুপের পণ্য আমদানি করে। র্যাংগস বলছে, কেবল তারাই সনির পন্য রিক্রি করবে। প্রতিষ্ঠানটির একক ব্যবসার কারণে অন্য আমদানিকারকরা সনির পন্য বিক্রি করতে পারছে না।
বাজারে একটি প্রতিষ্ঠানের হাতে সনির পন্য থাকার কারণে ক্রেতাদেরও প্রতারিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি ক্ষতির শিকারও হচ্ছেন।
এসব কারণ দেখিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনে র্যাংগসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আগামী ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
লাইটার জাহাজের পরিবহণ ভাড়া কমানোর অভিযোগে মামলা করেছে স্টিল উৎপাদক কোম্পানি বিএসআরএম। পাশাপাশি নৌ বিমার ওপর অনুমোদিত বিশেষ প্রিমিয়াম হার অব্যাহত রাখার অনুমতি চেয়ে মামলা করেছে একই প্রতিষ্ঠান। গত ৩০ ডিসেম্বর মামলা দুটির শুনানি হলেও আরও শুনানি করে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে প্রতিযোগিতা কমিশন।
কমিশনের ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এল আর বি গ্লোবাল লি. বনাম ভিআইপি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড এবং অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। এ মমালার শুনানি আগামী ১১ জানুয়ারি হওয়ার কথা রয়েছে। মামলা রয়েছে রাজধানী খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধেও। ১৩ জানুয়ারি এ মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ লবণ মিল মালিক গ্রুপের এক অভিযোগের শুনানি আগামী তিন ফেব্রুয়ারি প্রতিযোগিতা কমিশনের এজলাশ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। মামলা হয়েছে ডিএনএস সফটওয়্যারের বিরুদ্ধে। শুনানি আগামী তিন ফেব্রুয়ারি। এছাড়া বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক পন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ দেশীয় অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধে এর মধ্যে মামলা হয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশনে।
এর আগে রাওয়া ক্লাবের ক্যাটারিং সার্ভিসের বিষয়ে শুনানি করেছে এ কমিশন। শুনানি শেষে সিদ্ধান্তও দিয়েছে সরকারের এ প্রতিষ্ঠান। রাওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, একটি মাত্র ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে রাওয়া তাদের ক্যাটারিং চালিয়ে আসছিল। বাইরে থেকে কোনো ক্যাটারিং সেবা সেখানে নেয়া যেত না। প্রতিযোগিতা কমিশন এ বিষয়ে শুনানি করলে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভুল স্বীকার করে। এক্ষেত্রে কোনো জরিমানা করা হয়নি।
২০১২ সালের ২১ জুন যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এরমধ্যে দুইটি মামলার নিষ্পত্তি করেছে সরকারের এ সংস্থাটি। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে রাওয়া ক্লাবের বিষয়ে প্রথম সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। এরপর আরও একটি মামলার শুনানি করেছে তারা। বর্তমানে বেশ কিছু মামলা শুনানিতে রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলার সিদ্ধান্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে আসতে পারে বলে সংস্থাটির বরাতে জানা গেছে।
কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরতে বেশ কয়েকটি জেলায় যাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আরও কিছু জেলায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ে কমিশন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন, গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আসছে প্রতিযোগিতা কমিশন। মাঠ থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে তারা কাজ করছে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনা সঠিক পথে রাখতে স্বপ্রনোদিত হয়েও মামলা করার সুযোগ আছে কমিশনের।
প্রতিযোগিতা কমিশনের উপ-সচিব মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কমিশন কোনো প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিষ্ঠান তা অনুসরণ না করলে সে সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করা যাবে। এক্ষেত্রে দুই থেকে তিন বছরের জেল হতে পারে।’
ঢাকাটাইমস/০৬জানুয়ারি/কারই/ইএস/ডিএম