সুনামগঞ্জে দুই মৎস্যজীবী সমিতির সংঘর্ষে জেলের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক,সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:৩৫

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় জলমহালের ইজারা নিয়ে স্থানীয় দুই মৎস্যজীবী সমিতির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শ্যামাচরন বর্মন (৫৫) নামে এক জেলে নিহত এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলার পাইকুরহাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত শ্যামাচরণ বর্মণ ওই গ্রামের প্রয়াত গঙ্গাধর বর্মণের ছেলে। তিনি সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য ছিলেন।

সংঘর্ষের সময় জলমহালে থাকা স্থাপনা (খলা) ও জেলেদের ঘরে অগ্নিসংযোগ, মাছ ধরার কয়েক লাখ টাকার জাল, নগদ টাকা, আসবাবপত্র লোপাট করেছে দুই পক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৯ জনকে আটক করেছে।

এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় জলমহালপাড়ের আশপাশের গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই কোন অভিযোগ দায়ের করেননি বলে জানান ধর্মপাশা থানার ওসি।

স্থানীয়রা জানায়, পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই জলমহাল দখল করাকে কেন্দ্র করে দুইটি মৎস্যজীবী গ্রুপের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি তারা এই জলমহালে মৎস্য আহরণের জন্য হাওরের খলায় ঘর নির্মাণ করে অবস্থান নেয়। এরপর থেকেই উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে দুইপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই শ্যামাচরণ বর্মণ মারা যায়। আহত হন উভয় পক্ষের ৩০ জন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। আহতরা ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছে।

জানা গেছে, দুই মৎস্যজীবী সমিতির নেতা চন্দন বর্মণ এবং সুবীর বর্মণ মহালের খাজনা জমা দিয়ে রশিদ দেখিয়ে জলমহালের দখল নিতে চাইলে জেলা প্রশাসন কাউকেই দখল বুঝিয়ে দেন নি। কিন্তু দুই পক্ষই মাছ ধরার জন্য স্থাপনা (খলা) নির্মাণ করে। পরে চন্দন বর্মণের পক্ষ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পেলেও জলমহালে অন্য পক্ষের লোকজনও দখলে ছিল। এই অবস্থায় স্থাপনায় দুইপক্ষের এ সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে।

পাইকরহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফেরদৌসুর রহমান বলেন, ‘এখানে সুবল বর্মন ও চন্দন বর্মন পৃথক দুটি সমিতির বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।’

এদিকে ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিংয়ে ছিলাম। পরে সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নির্বাচনে নৌকা সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করি এবং রাতে বাড়ি ফিরি। ঘটনার সময় আমি এলাকায়ই ছিলাম না। শ্যামাচরন বর্মন হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। জলমহাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

(ঢাকাটাইমস/৮জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :