করোনাকালে ধর্ষণের শিকার ৬২৬ শিশু

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩৫ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
প্রতীকী ছবি

করোনা মহামারির কারণে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিশুরা বেশিরভাগ সময়ই থেকেছে বাড়িতেই। তারপরও এই মহামারিকালীন সময়ে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক। এছাড়া বাল্যবিবাহসহ নানা কারণে শিশুদের সার্বিক পরিস্থিতি  ‘উদ্বেগজনক’ বলছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’।

প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা পর্যালোচনা করে বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর (কারোনাকালে) পর্যন্ত ৬২৬ শিশু ধর্ষণের শিকার এবং বাল্যবিবাহ ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শনিবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০২০’ শিরোনামে শিশু অধিকার-বিষয়ক সংবাদের বিশ্লেষণ থেকে এসত তথ্য উপস্থাপন করে সংগঠনটি।

এসময় শিশুদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে তারা।

প্রতিবেদনটি তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানটি পাঁচটি জাতীয় বাংলা দৈনিক- প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ এবং তিনটি জাতীয় ইংরেজি ডেইলি স্টার, নিউএজ এবং ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত শিশু অধিকার বিষয়ক সংবাদ পর্যালোচনা করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় বছরজুড়ে করোনা পরিস্থিতি সত্ত্বেও করোনাকালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬২৬ জন শিশু এবং এই সময়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৩৭ জন শিশুকে। আর বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ১০১ শিশু।

এই সময়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ১৯২ জন শিশু নিহত হয়েছে, যার মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর সংখ্যা ১৫৮ জন। একইসময়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে ১৬৫ জন শিশু। এছাড়া ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, হত্যা, অপহরণ, নিখোঁজ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে আরো ১৪৫ জন শিশু করোনাকালীন গৃহর্কমী হিসেবে কাজ করার সময় ৭ জন মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়, যার মধ্যে তিনজন শিশু মারা যায়।

পর্যালোচনা অনুযায়ী ২০২০ সালে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরাই ধর্ষণের শিকার হয়েছে বেশি। এরপর রয়েছে ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা। হত্যা ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৪৫ জন শিশুকে। ১৩ থেকে ১৮ বছরের শিশুরাই বেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

এছাড়াও আলোচ্য সময়ে আত্মহত্যা করেছে ৩৪ জন শিশু এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে আহত হয়েছে ২৩ জন। নিখোঁজ ও অপহরণের শিকার হয়েছে ২৯ জন শিশু।

২০২০ সালে শিশু নির্যাতনেরই ১৬টি ঘটনা ঘটেছে।

 

এই বিষয়ে নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, এমজেএফের বিশ্লেষণ অনুযায়ী শিশুরা নিজের বাসায় নিরাপদ নয়। শিশুরক্ষায় নিয়োজিত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সকলকে আরো বেশি দায়িত্ববান হওয়ার পাশাপাশি শিশু অধিকার রক্ষায় সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানান।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সঞ্চালনায সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের শিশু-অধিকার বিষয়ক ককাসের সদস্য অ্যারোমা দত্ত এম.পি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মুহিবুজ্জান। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ফাতেমা ইউসুফসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন আলোচলায় অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০২০’র সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের শিশু সুরক্ষা বিভাগের সমন্বয়ক রাফেজা শাহীন।

ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি/একে/ইএস