হঠাৎ কেন বিধ্বংসী মেজাজে সাঈদ খোকন?

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৫২ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

হঠাৎ করে বিধ্বংসী মেজাজে সামনে এলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। নজিরবিহীনভাবে অভিযোগ করলেন নিজ দল থেকে নির্বাচিত মেয়রের কার্যক্রম নিয়ে। যা রীতিমতো বিস্মিত করেছে সাধারণ মানুষকে। কেন এমন করলেন সাঈদ খোকন?

কোনো কিছু না পাওয়ার যন্ত্রণাই কি মূল কারণ? সরকারি কোনো পদ-পদবীতে তিনি নেই। সর্বশেষ নগরপিতা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে হারিয়েছেন মেয়র পদও। আর এ কারণেই কি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন মেয়র হানিফপুত্র? এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে সামনে আসছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগর কর্তৃপক্ষের কোনো কাজ নিয়ে সাঈদ খোকনের অভিযোগ থাকলে তিনি তা দলীয় ফোরামে ‍তুলতে পারতেন। বলতে পারতেন প্রধানমন্ত্রীকেও। কিংবা সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারতেন এনিয়ে। কিন্তু তা না করে মানববন্ধন ডেকে যেভাবে তিনি প্রকাশ্যে বর্তমান মেয়রকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টিও আলোচনা এসেছে। দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বিরোধীদের চেয়েও বেশি বিরোধিতায় সরব হয়ে কী বোঝাতে চাইছেন খোকন?

যদিও ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান নগরপিতা ফজলে নূর তাপস বলছেন, এসব সাঈদ খোকনের ব্যক্তিগত অভিমত। এটি কোনো গুরুত্ব বহন করে না। ‘ব্যক্তিগত আক্রোশের’ কোনো বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেয়াটাও সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাঈদ খোকন অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে এসব টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অথচ অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পও অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

দক্ষিণ সিটির কর্মীদের বেতন দিতে না পারার বিষয়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার জবাবে বর্তমান মেয়র বলেন, ‘এটা ভ্রান্ত কথা। এমন বক্তব্যের বাস্তবে কোনো ভিত্তি নেই।’

এদিকে সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সাঈদ খোকনের মেয়াদকালেই মধুমতি ব্যাংকে দক্ষিণ সিটির হিসাব খোলা হয়েছিল।

সাঈদ খোকন ২০১৫ সালে নবগঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। তার বাবা মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র।

একমেয়াদের বেশি মেয়র পদে ঠাঁই হয়নি সাঈদ খোকনের। সর্বশেষ ২০২০ সালে দক্ষিণ সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন। তার জায়গায় ঢাকা-১০ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। এবং তিনি নির্বাচিত হন।

মেয়র পদে দায়িত্ব নিয়ে দক্ষিণ সিটিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেন ফজলে নূর তাপস। দুর্নীতির দায়ে চাকরি হারান নগর কর্তৃপক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা, কর্মচারী।

মেয়র তাপসের অভিযানে রাজধানীর বেশ কয়েকটি মার্কেটের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব মার্কেটে নকশাবহির্ভূতভাবে দোকান গড়ে তোলা হয়েছিল। অবৈধ দোকানের অনুমোদন কে বা কারা দিয়েছিল, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বের হয়ে আসে সাঈদ খোকনের নাম।

(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/কারই/এইচএফ/জেবি)