স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সর্ব ইউরোপিয়ান আ.লীগের ভার্চুয়াল সভা

কমরেড খোন্দকার, ইউরোপ ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৩৯

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের আয়োজনে `ঐ মহামানব আসে' শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সর্ব ইউরোপিয়ান আ.লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান এবং সুইডেন আ.লীগের নেতা হেদায়েতুল ইসলাম শেলির যৌথ পরিচালনায় বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে না আসতেন- তাহলে আ.লীগ নেতৃত্বহীন থাকতো। আ.লীগের নেতৃত্বে যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, তা বঙ্গবন্ধুর নামেই হয়েছে।’জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা, তার প্রতি আনুগত্য, তার আদর্শের প্রতি আমাদের আনুগত্য। এজন্য সারা বাংলাদেশের মানুষ (কিছু রাজাকার, আলবদর) ছাড়া ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগ্রাম করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু দেশে না থাকাটা ছিল বিরাট শূন্যতা। এই শূন্যতা পূরণের মত নেতৃত্ব তখন আ.লীগে ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ ছিল। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পরে আমাদের স্বাধীনতা পূল্ণতা পেল, আমাদের জাতীয় সরকার নেতৃত্ব পেল, সর্বপরি দলের মধ্যে কোন্দল দূর হয়ে আ.লীগ আবার ঐক্যবদ্ধ হলো।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না এলে ‘সোনার বাংলা’ জাতীয় সংগীত হতো না।’জয় বাংলা’ স্লোগান বর্জিত হতো এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং গণতন্ত্রেরভিত্তিতে বাংলাদেশের পুনর্গঠন সম্ভব হতো না।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর দেশে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা পায় দেশবাসী।

আমির হোসেন আমু বলেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও মানুষের আত্মতৃপ্তি ছিল না। ছিল না কারো মুখে হাসি। এমনকি বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে ফিরতে চাননি ভারতে মুক্তিযুদ্ধকালীন আশ্রয়রত বাংলাদেশের শরণার্থীরাও। সবার ভাবনা ছিল বঙ্গবন্ধুর বেঁচে থাকা নিয়ে। আর বেঁচে থাকলে কবে দেশে ফিরবেন সেই প্রশ্ন! ১০ জানুয়ারি ছিল বাঙালির কাছে বহু কাঙ্খিত, বহু প্রতীক্ষিত। যাকে কেন্দ্র করে আর যার আহবানে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, সেই মহান নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নতুন করে উজ্জীবিত হয় জাতি।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেশে ফিরে আসার কারণেই তার সাহসী কূটনৈতিক তৎপরতায়, বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতের মিত্রবাহিনীকে দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। স্বাধীন দেশ হিসেবে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি মিলেছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংহত করতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ওই সময়ে জরুরি ছিল উল্লেখ করেন আমু।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দেশবাসীকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা।

তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন বিমানবন্দরে অবতরনের পর তার পরিবারের কাছে যাননি। তিনি বিমানবন্দর থেকে সোজা সোহরয়ার্দী উদ্যানে অপেক্ষারত জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু সেদিন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেছিলেন, আমি কোনদিন ধারণা করিনি আবার তোমাদের সাথে দেখা হবে। তোমরা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছ, আমাকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করে এনেছ। আমি প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে তোমাদের এ ঋণ শোধ করব।

সেদিন কেউ ধারনা করতে পারেনি যে, জাতিরজনককে এভাবে সপরিবারে হত্যা করা হবে। বঙ্গবন্ধু নিজের রক্ত দিয়ে শুধু বাঙালি রক্তের ঋণ শোধ করে গেছে তা নয়, যতদিন বাঙালি থাকবে, বাঙালি জাতি থাকবে সর্বপরি যতদিন বাংলাদেশ থাকবে- ততদিন আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী থাকব।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বঙ্গবন্ধু যদি ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে না আসতেন তাহলে একদিকে যেমন স্বাধীনতা পূর্ণতা পেত না; তেমনি স্বাধীনতা কতটুকু টেকসই হতো তা নিয়ে আসলেই প্রশ্ন থেকে যায়।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ কাশেম, সহসভাপতি মনজুরুল হাসান সেলিম, সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক ড. ফরহাদ আলী খান, ইতালি আ.লীগের সভাপতি ইদ্রিস ফরাজি, সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল, ইতালি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা তুহিনা সুলতানা, জার্মান আওয়ামী লীগ সভাপতি বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু, জার্মান আ.লীগ নেতা মাসুম মিয়া, পর্তুগাল আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল আলম জসিম, নেদারল্যান্ডস আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন তপন, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ খান, নেদারল্যান্ডস আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা জামান, অস্ট্রিয়া আ.লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল কবির, সহ সভাপতি শ্যামল রহমান, ফিনল্যান্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খান, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান, গ্রিস আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার, সহ সভাপতি সামাদ মাতবর,

স্পেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিজভি আলম, নরওয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফিজুর রহমান, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক বেল্লাল হোসেন, সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ লিটন, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভানেত্রী সুলতানা নাহিদ, ঢাকাটাইমসের ইউরোপ ব্যুরো প্রধান কমরেড খোন্দকার প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :