উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ

উত্তম সরকার, গাইবান্ধা
| আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:৪৭ | প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:৪৪

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কমিটিতে জামায়াত শিবিরের নেতা, প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত, বিবাহিত এমনকি মাদকসেবীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ওই বিতর্কিত কমিটি গঠনের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষুব্ধ ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে। এসময় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও কেন্দ্রীয় কমিটির দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতাদের পক্ষে সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিবুর রহমান নয়ন উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মামুনুর রশিদ সুমনকে সভাপতি করে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতি সুমনের মা জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত থাকায় এবং ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি করায় বঞ্চিত নেতাদের আন্দোলনের কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি ওই সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করে। অথচ অজ্ঞাত কারণে ওই মামুনুর রশিদ সুমনকেই সাধারণ সম্পাদক করে অন্যান্য বিতর্কিতদের নিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি প্যাডে পলাশবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের ১১ সদস্য বিশিষ্ট বিতর্কিত কমিটি গঠন করে তা ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। শুধু তাই নয়, বিতর্কিত সুমন বিবাহিত। সে গাইবান্ধা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে মাদক সেবনের সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে। এসময় তার কাছে মাদক পাওয়া গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে সাত দিনের সাজা দেয়।

এছাড়াও, বিতর্কিত এই কমিটিতে আতিক হাসান মিল্লাতকে সভাপতি পদ দেয়া হয়েছে। সেও একজন মাদকসেবী। তার পলাশবাড়ী ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং সে ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সকল কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যে মেলামেশায় সম্পৃক্ত থাকে এবং তার পরিবার জামায়াত-বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তদুপরি সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমানও বিবাহিত এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত। এছাড়া, ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল মিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অডিটর সেজে পরিদর্শনের সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। যা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় এবং সেই প্রতারণা মামলাটিও চলমান রয়েছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরাদ সরকার মিকাত এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক জুলিয়াস ছাত্রলীগের সঙ্গে কখনও জড়িত ছিলেন না। মুরাদ সরকার মিকাত দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

সংবাদ সম্মেলনে পলাশবাড়ী ছাত্রলীগের রাজনীতিকে কলুষিত করতে বিতর্কিত কমিটি গঠন এবং বিএনপি-জামায়াতের টাকায় নিয়ন্ত্রিত গাইবান্ধা ও পলাশবাড়ীর চক্রান্তকারী নেতাকর্মীদের শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- পলাশবাড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন টমাসসহ সাইফ সরকার, জাহিদ হাসান ও রমজান আলী।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত এই কমিটি অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গত সোমবার পলাশবাড়ী উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করে। পথসভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারাও একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।

(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :