একই কিশোরীকে তিনবার অপহরণ করে বারবার ‘ধর্ষণ’

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:২৯ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:২৪

কাজী মুস্তাফিজ, ঢাকাটাইমস

ঢাকার আশুলিয়ায় একটি বাড়িতে গৃহশিক্ষক হিসেবে থাকতেন নওগাঁর ছেলে সালমান রহমান সাজু। ওই বাড়িতে থাকার সুবাদে গোপনে বিভিন্ন সময় কিশোরী ছাত্রীর (১৫) ছবি তুলে রাখতেন তিনি। পরে সেসব ছবি বিকৃত করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে বারবার ‘ধর্ষণ’ করেন সাজু।

এখানেই ক্ষান্ত দেননি গৃহশিক্ষক সাজু। নির্যাতিতা কিশোরীকে পর পর তিনবার অপহরণ করেন বলেও তার পরিবারের অভিযোগ। বর্তমানে ওই কিশোরীর খোঁজ পাচ্ছে না তার পরিবার।

নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবার প্রতিকারের আশায় থানায় অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের তদন্তে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার ও অভিযুক্ত সাজুকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিম মিয়ার দপ্তরে ডাকা হয়েছে।

নাসিম মিয়া অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কেউ যেন ন্যায়বিচার বঞ্চিত না হন সেই বিষয়টি পুলিশ দেখবে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবো।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়ি নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায়। তার মা আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার কর্মী। চাকরির কারণে আশুলিয়ায় বসবাস করেন তারা।

অন্যদিকে কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণে অভিযুক্ত সালমান রহমান সাজুর বাড়িও আত্রাইয়ের শিমুলিয়া গ্রামে। একই এলাকার হওয়ায় ঢাকায় এসে নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়িতে লজিং থাকতেন সাজু।

অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ২০ মে প্রথমে সাজু ওই কিশোরীকে আশুলিয়া থেকে অপহরণ করেন। ১০ দিন অজ্ঞাত জায়গায় আটকে রেখে তাকে উপুর্যপরি ‘ধর্ষণ’ করে।

অপহরণের পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই সাইমুন মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে আসামির অবস্থান নির্ণয় করে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।

তবে ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছে, মেয়েকে উদ্ধার করে তাদের কাছে না দিয়ে পুলিশ সাজুর জিম্মায় দেয়। এসময় অভিযোগকারী নারীকে ডেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিদায় করে দেন জিডির তদন্ত কর্মকর্তা।

পরিবারটির অভিযোগ, ইন্টারনেটে অশ্লীল ছবি ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সাজু গত বছরের ১২ আগস্ট আবারো কিশোরীকে অপহরণ করেন। এবার টানা তিন দিন তাকে সাজুর ভাবীর বাড়িতে রেখে ‘ধর্ষণ’ করা হয়।

মেয়েটির মা জানান, মান-সম্মানের দোহাই দিয়ে ঘটনার বিষয়ে কাউকে না জানাতে কিশোরীকে পরামর্শ দেন অভিযুক্ত সাজুর ভাবী রিপা আক্তার। এরপর কিশোরীকে তার বাড়ির সামনে রেখে যান সাজু। পরে পরিবারের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানায় কিশোরী।

সবশেষ গত ৩ জানুয়ারি বিকালে আবারও মেয়েকে আশুলিয়ার বাসা থেকে সাজু তুলে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গার্মেন্টসকর্মী মা। এরপর ৭ জানুয়ারি আবারো আশুলিয়া থানায় জিডি এবং ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন এ নারী।

কিশোরীর মামা নুর আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা অসহায় মানুষ। আমরা হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই। সুবিচার পেতে আমরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চাই।’

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/কেএম)