‘জমি বিরোধেই ব্যবসায়ী ফরিদুল হত্যা’

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৪৭

জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং টাকা-পয়সার দেনা পাওনাকে কেন্দ্র করে নিজের আপন ছোট ভাইসহ আত্মীয়দের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন বগুড়ার শেরপুরের ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম। এ ঘটনার সাথে জড়িত পঁাচজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা। বুধবার বেলা ১২টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান তিনি।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলামকে তার নিজ বাড়ির দরজার সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ফরিদুলের স্ত্রী ইসমত আরা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় এজাহার করেন। পরে পুলিশি তদন্ত এবং প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে পুলিশ হত্যার রহস্য এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, হত্যার শিকার ফরিদুলের সৎ শ্যালক ওমর ফারুক, ফরিদুলের ভাতিজা ফারুক আহম্মেদ, ফরিদুলের চাচা আব্দুর রাজ্জাক, তার আপন ছোট ভাই জিয়াউর রহমান জিয়া ও তার ছোট ভাই জিয়ার স্ত্রী শাপলা খাতুন।

সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, হত্যার পর পুলিশ কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না। ক্লু নিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা যখন চিন্তিত ঠিক সেই সময় গত ৮ জানুয়ারি পুলিশের কাছে একটি অপহরণের তথ্য আসে। নিহত ফরিদুলের শ্যালক ওমর ফারুককে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার স্ত্রীর কাছে ফোন আসে। পুলিশ অপহৃত ওমর ফারুককে মানিকগঞ্জ থেকে উদ্ধার করার পর জানতে পারেন তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করে অপহরণ নাটক সাজিয়েছেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে ওমর ফারুক ফরিদুল হত্যার বিস্তারিত পুলিশকে জানায়।

ওমর ফারুক জানায়, দুলাভাইকে খুন করার পর তিনি মানসিক অস্থিরতায় ভুগছিলেন। অপহরণ নাটক সাজিয়ে তিনি নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছিলেন। এরপর ওমর ফারুকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে নিহত ফরিদুল তার মা'র সম্পত্তি থেকে ভাইবোনদের বঞ্চিত করেছে। মায়ের মৃত্যুর দুই বছর পর তিনি দলিল বের করে ভাই বোনদেরকে জানান সকল সম্পত্তি তাকে লিখে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুরো পরিবারের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও জমি বন্ধক নেওয়াকে কেন্দ্র করে তিন লাখ টাকা লেনদেন নিয়ে শ্যালক ওমর ফারুকের সাথে ফরিদুলের বিরোধ চলছিল। এ কারণে ওমর ফারুকও ফরিদুলের ভাই-ভাতিজাসহ অন্যদের সাথে খুনের পরিকল্পনায় যোগ দেন।

গত ২৮ ডিসেম্বর ফরিদুলের স্ত্রী-সন্তান ঢাকায় যাওয়ায় ফরিদুল বাড়িতে একাই অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগটি কাজে লাগায় হত্যাকারীরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফারুক আহম্মেদ চাকু নিয়ে ফরিদুলের বাড়িতে প্রবেশ করে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফরিদুল বাড়িতে প্রবেশ করলে ওমর ফারুক তার মাথায় ছুরিকাঘাত করে। এসময় ফরিদুলের চাচা, ভাই-ভাবি ও ভাতিজা দরজা দিয়ে প্রবেশ করে ফরিদুলকে ধরে বটি ও চাকু দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তারাই পুলিশকে হত্যার সংবাদ দেয় এবং ফরিদুলের মরদেহ উদ্ধার এবং দাফন কাফনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা আরও জানান, নিহতের শ্যালক ওমর ফারুককে উদ্ধার করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানের নেতৃত্বে শেরপুর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাচ্চু বিশ্বাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যবসায়ী ফরিদুল হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

আসামিদের মধ্যে দু্ইজনকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য এবং তিনজনকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

সাভারে দোকানে এসি বিস্ফোরণ, দগ্ধ-আহত ৭

সালথায় প্রতিপক্ষের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে এসপি

সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১২

মৌলভীবাজার জেলা নাগরিক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত, নতুন সম্পাদক আব্দুল বাছিত বাচ্চু

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

সালথায় সহিংসতার মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪৪ জন গ্রেপ্তার

উপজেলা নির্বাচন: নোয়াখালীতে মা-ছেলেসহ চেয়ারম্যান পদে ৫ জনের মনোনয়ন জমা

উপজেলা নির্বাচন: পদত্যাগ করলেন খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম

গাজীপুরে মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ গেল দুই বন্ধুর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :