রাজশাহীতে আ.লীগ প্রার্থীর পথসভায় গুলিবর্ষণ

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১৭ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১০:০৩

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর সমর্থকরা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আড়ানী পৌর সদরের তালতলা বাজারে আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদের পথসভায় গুলি ও বোমা হামলা চালান তারা। 

এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী এবং ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগেরও ঘটনা ঘটে।

এছাড়াও তালতলা বাজারে শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর ও লুট হয়েছে। মুক্তারের সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহিদের ভাগ্নে তুষার (২৮) আহত হয়েছেন। তাকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

রাত ১১টার দিকে তালতলা বাজারের উত্তরএবং দক্ষিণ দিকে দুই প্রার্থীর প্রায় তিন হাজার সমর্থক সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছিলেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শাহিদের পথসভার প্রায় শেষ মুহূর্তে বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সশস্ত্র সমর্থক আকস্মিক হামলা চালান। এসময় মুক্তার আলীসহ তার সমর্থকরা গুলিবর্ষণ শুরু করেন এবং বোমা হামলা চালান। প্রাণের ভয়ে এসময় শাহিদের সমর্থকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। 

এরপর মুক্তার মাইকিং করে তার সমর্থকদের ডাকেন। শাহিদসহ উপস্থিত নেতাকর্মীরা  এসময় সংগঠিত হয়ে মুক্তারের সমর্থকদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। এসময় মুক্তারের প্রায় পাঁচ শতাধিক সমর্থক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এদের মধ্যে সশস্ত্র কয়েকজন সমর্থক  গুলিবর্ষণ শুরু করে। বোমা হামলা চালায়। দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে শাহিদের সমর্থকদের তাড়া করে। মুক্তারের সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এসময় শাহিদের ভাগ্নে তুষার আহত হন। 

একপর্যায়ে মুক্তারের সমর্থকরা সেখানে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় এবং মেয়র প্রার্থী শাহিদের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া শতাধিক দোকানে লুট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি দুপুরে আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে মুক্তারের সমর্থকরা মাছরাঙা টেলিভিশন রাজশাহীর ক্যামেরাপারসন মাহফুজুর রহমান রুবেল এবং দীপ্ত টিভির ক্যামেরাপারসন রফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়। এসময় রাজশাহী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুনসহ তার সমর্থকদের ওপরও হামলা চালায় মুক্তারের সমর্থকরা।

মুক্তার বর্তমানে আড়ানী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ কারণে তাকে আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/কেআর)