গোড়ানে দুই মেয়েকে হত্যা

দশ মাস গেলেও ময়নাতদন্তে আটকা মামলার তদন্ত

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৫৭

রাজধানীর গোড়ানে মায়ের হাতে নৃশংসভাবে দুই মেয়ের নৃশংস খুনের মামলা দশ মাস পেরোলেও কোনো গতি পায়নি। এর মধ্যে চাঞ্চল্যকর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তাও বদল হয়েছে। ওই দুই মেয়ের ডিএনএ ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় মামলার তদন্তও আটকা পড়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য। আদরের দুই মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা ন্যায়বিচারের আশায় দিন পার করছেন।

গত বছরের ৭ মার্চ খিলগাঁওয়ের গোড়ানে মেহজাবিন আলফি (১১) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৭) হত্যার শিকার হয়। হত্যাকাণ্ডের পর জানা যায়, তাদের মা আক্তারুন্নেছা পপি দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করে নিজেও গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে হত্যার শিকার মেয়ে দুটির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব স্ত্রী আক্তারুন্নেছা পপিকে একমাত্র আসামি করে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আক্তারুন্নেছা পপি এখন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দি।

চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্তে প্রথমে দায়িত্ব পান খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাহাত খান। তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত সাহা।

ঢাকা টাইমসকে সুজিত সাহা বলেন, ‘এখনও ময়নাতদন্তের ও ডিএনএ প্রতিবেদন হাতে না পাওয়ায় মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম আটকে আছে। এসব প্রতিবেদন পেলেই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেবো।

মেহজাবিন আলফি ও জান্নাতুল ফেরদৌসের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে। ঘটনার দশ মাস পরেও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা সোহেল মাহমুদ অফিসের নথিপত্র দেখে এ বিষয়ে পরে বলতে পারবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।

এদিকে মামলার বাদি মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব বর্তমানে গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের রাড়িখাল গ্রামে বাড়িতে থাকেন। শ্রীনগর বাজারে তার একটি ইলেনট্রনিক্সের দোকান রয়েছে। তবে মর্মান্তিকভাবে দুই সন্তানকে হারিয়ে তার ব্যবসাও বন্ধের পথে। এখন দুই কন্যাকে হত্যার বিচারের আশায় দিন গুণছেন মোজাম্মেল হোসেন।

এদিকে কাশিমপুর কারাগারের একটি সূত্রে জানা গেছে, দুই মেয়েকে হত্যার ঘটনায় অনুশোচনায় দগ্ধ আক্তারুন্নেছা পপি। কারাগারে প্রায় সময় কান্না আর নামাজ দোয়া করেই দিন কাটছে তার।

মোজামাম্মেল জানান, তার স্ত্রী মাস খানেক আগে কারাগার থেকে মা সেলিনা বেগমের কাছে ফোন করে ক্ষমাভিক্ষা চান। মোজাম্মেলের মা পপির কাছে কেন দুই মেয়েকে হত্যা করেছে জানতে চাইলে কান্নাকাটি করে ফোনের লাইন কেটে দেন। ঢাকা টাইমসকে মোজাম্মেল বলেন, ‘আমার মা তাকে (পপি) বলেছেন, কোনো সমস্যা থাকলে পারিবারিকভাবে সুরাহা করতে পারেত। এখন যেহেতু হত্যা মামলা হয়েছে, আইনকানুন আছে। যা হওয়ার আদালতেই হবে।’

মামলার দায়িত্ব পেয়ে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা সুজিত সাহা তাকে ফোন করে যোগাযোগ করেছেন জানিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি আপনার যখনই দরকার হবে ডাকলেই আমি আপনার কাছে চলে আসবো। আমি আদালতে গিয়েও আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। এই মামলার বাদি এখন সরকার তাই আমাকে প্রয়োজন হলে ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোজাম্মেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি মুন্সিগঞ্জে থাকলেও আমার সন্তানদের কখনও কোনো কষ্ট দেইনি। আমার বড় মেয়েটি মেধাবি ছাত্রী ছিল। সবসময়ে আমি তাকে বলতাম, মা ভালো করে লেখাপড়া করো। তোমাদের আমি বিসিএস ক্যাডার বানাবো। কিন্তু তিনি (স্ত্রী) আমার সব স্বপ্ন নষ্ট করে দিয়েছেন। এখন আমি তার ন্যায় বিচার চাই। যাতে করে আর কেউ সন্তান হত্যার মতো ঘৃণিত অপরাধ করার সাহস পান।’

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির নিন্দা 

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে স্থানান্তর করা হবে

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই পরাজিত হয়েছে: মজনু

বোনের পর চলে গেল শিশু তাওহিদও, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের লিডারসহ ২০ সদস্য আটক, অস্ত্র উদ্ধার

‘আর সহ্য করতে পারছি না’ বলেই সাত তলা থেকে লাফিয়ে তরুণের মৃত্যু

এনএসআই’র নতুন পরিচালক সালেহ মোহাম্মদ তানভীর

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনবে ভারত সরকার

যারা আমার মায়ের হাতে খাবার খেত, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকার ৫৫০ বিআরটিসির বাস ঈদে সারাদেশে চলবে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :