জঙ্গিবাদে জড়ানো ও ফিরে আসার গল্প বললেন আসমা
আবিদা জান্নাত আসমা। প্রথমে এক যুবকের সঙ্গে প্রেম, অতঃপর বিয়ে। সেই সূত্রে জড়িয়ে পড়েন জঙ্গিবাদে। তবে অন্ধকার এই জগতের প্রতি এক সময় চলে আসে অনীহা। পরিত্রাণ চান এ থেকে। অবশেষে র্যাবের মাধ্যমে ফিরে এলেন স্বাভাবিক জীবনে।
বৃহস্পতিবার র্যাব সদরদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে আসমাসহ ৯ জঙ্গি ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। ‘নব দিগন্তের পথে' স্লোগানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
জঙ্গিবাদে জড়ানো এবং এ থেকে ফিরে আসার গল্প জানাতে গিয়ে আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, '২০১৯ সালে আমি এসএসসি পাস করি। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারকে না জানিয়ে তার সাথে অনেক জায়গায় দেখা করতাম। ২০১৮ সালে পরিবারকে না জানিয়ে তাকে বিয়ে করি। এসএসসি পাসের পর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাই। সেও আমার সাথে যায়। এটা তার পরিকল্পনা ছিল।'
'ছয় মাস পর আবার দেশে ফিরে আসি। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে থাকি। মূলত এই সময়ে জানতে পারি আমার স্বামী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সেও আমাকে তার কাজে সহযোগিতা করতে বলে। তার মাধ্যমে কনভিন্স হয়ে আমিও জঙ্গিবাদে জড়িত হই। কিন্তু আমি যে ভুলপথে পা বাড়িয়েছি তা ধীরে ধীরে বুঝতে পারি। একটি স্বাভাবিক জীবনে বাবা মায়ের আদর স্নেহ ভালোবাসা সবকিছু ছেড়ে বস্তি ও বন্দীর জীবন-যাপন করতে হয়।'
আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ‘যে মানুষটি ভালোবেসে স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সেও কষ্টের জীবন যাপন করছিল। সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কষ্টের জীবন বেছে নিতে হয়। পরে এ থেকে পরিত্রাণের সিদ্ধান্ত নিই। এক পর্যায়ে আমি পালিয়ে এসে একাই র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করি। তাই র্যাবকে ধন্যবাদ। আমার স্বামীকেও আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান করছি।
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ‘আমাদের কাউকে যেন ফাঁদে পড়তে না হয়। নিজের যেন একটা জাজমেন্ট থাকে। আমরা নিজেরা যেন জাজ করতে পারি। অন্যদের কথা যেন আমরা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করি।’
প্রায় দুই বছর পর আসমার মা তার মেয়ের দেখা পান। অনুষ্ঠানে আসমাকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব বলছে, আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিদের প্রতিনিয়ত নজরদারি করবে তারা।
(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/এসএস/জেবি)