‘সৌদিতে রোহিঙ্গা পরিচয়ে থাকলে পাসপোর্ট ইস্যু বিবেচনায় নেবে সরকার’

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৩১ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ২২:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রোহিঙ্গা পরিচয়ে সৌদি আরবে কোনো বাংলাদেশি যদি থেকে থাকে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পাসপোর্টের বিষয়টি সরকার বিবেচনায় নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

দেশের দরিদ্র মানুষ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সৌদি বাদশাহর পাঠানো ‘খাবার ঝুড়ি’ বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এমন বক্তব্য এল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।

ঢাকার স্থানীয় একটি হোটেলে রবিবার প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ দরিদ্র ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এ ৩০ হাজার খাবার ঝুড়ি পাঠিয়েছেন। কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টার এসব খাদ্য বিতরণ করছে।

রোহিঙ্গা পরিচয় নিয়ে সৌদি আরবে কোনো কোনো বাংলাদেশির অবস্থানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশি কোনো নাগরিক যদি সৌদি আরবে রোহিঙ্গা হিসেবে গিয়ে থাকে, তাকে অবশ্যই আমরা বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিবো। তবে রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশি পরিচয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি গেছে তারা যদি আবেদন করে রিনিউ করার জন্য তা খতিয়ে দেখা হবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটা আজকের না। ৫০-৬০ বছর আগেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছিল। সৌদি আরবও এ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আপনারা জানেন সৌদি একটি শহরে রোহিঙ্গারা একটা ক্যাম্প করে থাকছে। তবে বাংলাদেশে এবার যেটা আসছে এক দশমিক এক মিলিয়ন। এটা তো বিরাট একটা ফ্যাক্ট।’

সৌদি বাদশাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামন খান কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম অর্থনৈতিক দেশ। এভাবে অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে চললে আগামী ২০৩১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহত্তর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ হবে। এজন্য অবশ্যই বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো সহযোগিতা করছে। এর মধ্যে সৌদি আরবসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানায়।’

রোহিঙ্গা ছাড়াও দেশের উপকুলীয় অঞ্চলে যারা প্রতিনিয়ত প্রকৃতির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাদেরকেও এই খাদ্য প্রকল্পের আওতায় আনার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব ভূমিহীনদের ঘর দেবার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। যেখানে আমাদেরকে সহায়তা করছে সৌদি সরকার। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

‘মিয়ানমারের ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা আমাদের এখানে অবস্থান করছে। আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি। তাদেরকে নিজ দেশে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চলছে। এসব কাজে আমরা সবসময় সৌদি আরব পাশে পেয়েছি। শুধু ফুড বাস্কেট বা খাবার ঝুড়ি দিয়ে না, রোহিঙ্গারা যাতে নিজ জন্মভূমিতে ফেরত যেতে পারে সেজন্যও সৌদি আরব আমাদের সহায়তা করছে।’

সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করে মন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে একটা চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্ক ক্রমেই আরো উন্নত হচ্ছে। বর্তমান রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এই সম্পর্ক আরো বাড়াবেন বলে আমি আশা করছি।’

এর আগেও সৌদি বাদশাহর পাঠানো খাবার কক্সবাজার, ঢাকা, নীলফামারী, যশোর, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিতরণ করা হয়। এক পরিবারে চারজন হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় তেল, চিনি, চালসহ বিভিন্ন উপকরণ ছিল এসব খাবার বাস্কেটে। গত ডিসেম্বরে চালু হওয়া এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টার।

(ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/এসএস/ডিএম)