ধর্ষণের ঘটনায় ভিন্ন প্রতিবেদন, এসপি-সিভিল সার্জনকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:৩৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের মামলায় মেডিক্যাল প্রতিবেদনে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আসায় জেলা পুলিশ সুপারসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ১০ চিকিৎসককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রবিবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত ডাক্তারদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশদের ক্ষেত্রে আইজিপিকে পৃথক ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন এবং তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. শাহপরান চৌধুরী।

আইনজীবীরা জানান, গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ভিকটিম শিশুর পিতা নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর তার ৭ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মামলায় প্রতিবেশি আসামির বয়স উল্লেখ করা হয় ১৫ বছর।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে পরদিন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

এদিকে আসামি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলে গত ৩ নভেম্বর এর শুনানি হয়। সেদিন আসামির বয়স প্রমাণের জন্য তার জন্ম সনদ দাখিল করা হয়। জন্ম সনদ অনুযায়ী তার বয়স ছিল ১০ বছর। এ অবস্থায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলার কেস ডকেট (সিডি) এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

পরে তদন্ত কর্মকর্তা আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আইনের ৯(১) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একইসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। এ সময় জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ১২ সেপ্টেম্বরের দেওয়া একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সে প্রতিবেদনেও অসঙ্গতি দেখার পর আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা জেলা সদর হাসপাতালের আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে আবেদনেও নির্যাতনের শিকার শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাধিক চিকিৎসক ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন দেন। ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদনে তদন্তে গাফিলতি প্রতীয়মান হওয়ায় এসব আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।

তার আইনজীবী শাহপরান চৌধুরী জানান, জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী শিশুর বয়স ১০ বছর। বয়স বিবেচনায় আমরা আদালতে জামিন প্রার্থনা করি। আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলার প্রয়োজনীয় নথিপত্র দাখিল করতে নির্দেশ দেন। দাখিলকৃত মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে আদালতের খটকা লাগে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।

ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/ ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :