দীর্ঘ দিনের ভাঙা সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:০৯

সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে তিন উপজেলার যোগাযোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়ক। এ সড়কের আব্দুজ জহুর সেতুর পশ্চিম পাড়ের রাধানগর পয়েন্ট থেকে চালবন পয়েন্ট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কটি গর্ত ও ভাঙাচোরার কারণে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর থানার মানুষ, সরকারি কর্মকর্তা, পর্যটকরা জরুরি প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেলা সদরে যাতায়াত করছে।

ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। এরপরও কারো কোন দায় নেই বলে ক্ষেভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

গত বছরের কয়েক দফা বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মেরামত না করায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে। সড়কের বেহাল এই ভাঙনের কারণে সিএনজি, মোটরসাইকেল কিংবা লেগুনা করে কোন যাত্রী যেতে চাইলে ঝাঁকুনির কারণে ও ধুলোবালিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবুও জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে চড়তে হচ্ছে পথচারীদের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যানবাহন অচল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় সড়কেই। এছাড়াও চলাচলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

জেলার সচেতন মহলরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই শুরু হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদন্ত কমিটিসহ নানান কাহিনী। অথচ কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা নিলেই সমাধান হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খামখেয়ালী আর অবহেলার কারণে সড়কে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এই সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেই দেখা যাবে কাজ শুরু হবে, এর আগে আর হবে না।

এই সড়কে দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছেন মোটরসাইকেল চালক সেলিম আহমদ। তিনি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত ভয় কাজ করে কখন যেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ি।

সিএনজি চালক আজহারুল বলেন, এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হলে প্রতিনিয়ত মনে ভয় হয় কখন জানি গাড়ির চাকা নষ্ট বা গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয়। তবুও আমাদের জীবিকার তাগিদে জীবন ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়িই জেলা শহরে যেতে হয় যাত্রী নিয়ে। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের যত দ্রুত সম্ভব এই রাস্তার সংস্কারের দাবি।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের অ্যাম্বুল্যান্স চালক কাউসার জানান, চালবন পয়েন্ট হতে রাধানগর আব্দুর জহুর সেতু পর্যন্ত সড়কের অধিকাংশ স্থানে ভর ভর গর্ত সৃষ্টি হয়ায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহনসহ মানুষজন। এই সড়ক দিয়ে অসুস্থ মানুষকে নিয়ে যাওয়া হলে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষভাবে গর্ভবতী নারীদের এই রাস্তা দিয়ে জেলা সদরে নিয়ে যেতে হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয়। এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানোর ফলে গাড়ি অনেক ক্ষতি হয়।

ব্যবসায়ী সাদেক আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার এমন বেহাল অবস্থা থাকার পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে এই সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে ভাঙা এই সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সুনামগঞ্জ জেলার উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশা বিরাজ করছে দীর্ঘ দিন ধরে। প্রতিদিন শত শত গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খুব দ্রুত এ সড়কের মেরামত করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, টেন্ডার হয়েছে। খুব দ্রুতই এই সড়কের কাজ শুরু করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :