টাটকা মাছ ফল ও সবজি চেনার উপায়

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ১০:০৭

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

চারদিকে শুধু ভেজালের সমারোহ। ভেজাজেলারে জালে আটকা পড়েছে শহর-নগর, পথ-প্রান্তর, গ্রাম-গঞ্জ তথা সমগ্র দেশের মানুষ। খাদ্যে সাধারণত ফরমালিন, কার্বাইড, কাপড়ের রঙ, ইউরিয়া সার ইত্যাদি রাসায়নিক দ্রব্য মিশানো হয়। এসব দ্রব্যমিশ্রিত খাদ্য ও ফল-মূল মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। মানুষের কিডনি, হার্ট ইত্যাদির জন্য ভেজালযুক্ত খাবার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। হতে পারে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, গ্যাসট্রাইটিস! এমনকী ক্যানসারের মতো মারণরোগ ডেকে আনে।

ভেজাল খাবারে পুরো বাজার সয়লাব। কাজেই টাটকা খাবার কোথায় পাওয়া যায় সেটা জানতে হবে। এর সাথে সাথে টাটকা খাবার চিনতে হবে। যারা সচরাচর বাজার করেন, তারা খুব সহজেই টাটকা ও সতেজ খাবার চিনে কিনতে পারেন। তাই টাটকা খাবার চেনার জন্য অভিজ্ঞদের পরামর্শ অবশ্যই সর্বজনগ্রাহ্য। এছাড়াও তাজা ফল, ফ্রেশ শাক-সব্জি চেনার জন্য কিছু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কেও জ্ঞান থাকা দরকার।

মাছের চোখ বলে দেয়, রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে কি না। ঘোলাটে, অনুজ্জ্বল বা সজীবতার লক্ষণ না থাকলে বুঝতে হবে ক্ষতিকর রাসায়ণিক মেশানো হয়েছে। মাছ কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন সেটির আঁশ উজ্জ্বল আছে কিনা। পাশাপাশি মাছের চোখ কতটা পরিষ্কার আছে সেটা দেখেও বোঝা যায় সেটি কতটা ফ্রেশ। মাছের মাথা, কানকো ও তেলে এর প্রকোপ বেশি। রাসায়ণিক যুক্ত মাছের পেটের দিক বেশি নরম হয়। মাছ কেনার সময় হাতে নিয়ে দেখে বুঝে কেনা উচিত। গাদার দিকে মাছ অনেকটা নিরাপদ। রাসায়নিকযুক্ত মাছ সাধারণ মাছের তুলনায় খুব সহজে কাটা যায়। রক্তপাতও তেমন হয় না।

বাজার থেকে কেটে রাখা মাংস কিনবেন না। কারণ বাসি মাংসকে ঠিক রাখতে তাতে রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়। চোখের সামনে কাটা হচ্ছে এমন মাংস কিনুন। রাসায়নিক দেওয়া হয়েছে, মনে এমন এতটুকু সন্দেহ জাগলে কিছুতেই তা কিনবেন না। ‘রেড মিট’ বা লাল মাংস বলতে আমরা সাধারণত গরু বা খাসির মাংসকেই বুঝি। এই মাংস যদি দেখতে কিছুটা বাদামি হয়ে যায় এবং পিচ্ছিল হয় তাহলে না কেনাই ভালো।

মুরগির মাংস কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন সেটা থেকে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ আসছে কিনা। দুর্গন্ধ আছে এবং যে বক্সে রাখা হয়েছে তার নিচের দিকে তরলের আধিক্য থাকলে সেই মুরগির মাংস না কেনাই ভালো।

টাটকা ফল সবজি  উজ্জ্বল রঙয়ের হবে। বেশি নরম বা ফ্যাকাসে হলে না কেনাই ভালো। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় যে ফল পাকে তাতে মাছি বসবে কিন্তু কেমিক্যাল দ্বারা পাকানো হলে সে ফলে মাছি বসবে না। ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগিয়েও বোঝা যায় ফল টাটকা কিনা। শাকসবজির মধ্যে ছোট/বড় ছিদ্র, দাগ বা অমৃণ হলে না কেনাই ভালো।

 

বাজার থেকে ফল, শাক-সবজি, মাছ কেনার পর, সেগুলোকে কীভাবে রাসায়নিক মুক্ত করবেন-

 

রান্নার আগে লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ ৯০ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া, প্রথমে চাল ধোয়া পানি ও পরে সাধারণ পানি দিয়ে মাছ ধুলেও এর পরিমাণ অনেকটাই কমে।

যে কোনও ফল বা সবজি খাওয়ার বা রান্না করার আগে ১০ মিনিট লবণ মেশানো গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।

অনেকেই শুটকি মাছ ভালবাসেন। আর মাছের শুটকিতে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো হয়। তাই রান্নার আগে প্রথমে গরম পানিতে ১ ঘণ্টা এবং তারপর স্বাভাবিক পানিতে আরও ১ঘণ্টা শুটকি ভিজিয়ে রাখুন।

মাছ রান্না করার আগে এক ডেকচি পানিতে ৫ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাছ পুরোপুরি রাসায়নিক মুক্ত হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)